‘মাইক্রোচিপ ভিএলএসআই ডিজাইন ওয়ার্কশপ’-এর উদ্বোধন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসির্টির ক্যাম্পাসে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনব্যাপী এই ওয়ার্কশপ শেষ হবে ১২ নভেম্বর। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথোরিটি (প্রজেক্ট অথোরিটি), ক্যাডেন্সি (ভিএলএসআই টুল ডিজাইনার), এসবিআইটি ইনকরপোরেশন বাংলাদেশ (ক্যাডেন্সি স্থানীয় অংশীদার) এবং স্টার কম্পিউটার সিস্টেম লিমিটেড (রিসোর্স ও শিক্ষা অংশীদার) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের নিজেদের ডিজাইন তৈরির জন্য বাংলাদেশে ভিএলএসআইয়ের অভাবনীয় সুযোগ রয়েছে। এশীয় অঞ্চলে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সর্বাধিক আয়ের সুযোগও রয়েছে।
বৈদ্যুতিক নকশার ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রনিক্স উৎপাদন বৃদ্ধি, গবেষণা ও উন্নয়নের কারণে সেমিকন্ডাক্টরের ব্যবহার আকাশ ছোঁয়েছে। যা সেমিকন্ডাক্টর ভ্যালু চেইনের ক্ষেত্রে আবশ্যক হয়েছে। এই প্রবণতার কারণে শুধু ডিজাইন পরিষেবাদির প্রযুক্তিগত পরিশীলনই বাড়েনি, সেসঙ্গে বাজারে প্রচুর আউটসোর্সিং প্রকল্প আসতে শুরু করেছে। বিশেষত দেশের স্বল্প ব্যয়ের শ্রম এবং প্রচুর প্রতিভাসম্পন্নদের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। যে কোনো সফল আইওএনটি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভিএলএসআই এবং সেমিকন্ডাক্টরের প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম এবং কনটেন্টসহ সঠিক পরিবেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত দল তৈরি করতে পারলে আউটসোর্সিং ডিজাইন এবং গবেষণার জন্য বাংলাদেশ পরবর্তী হট-স্পট হিসেবে পরিণত হতে পারে।
মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হিসাবে; এসবিআইটি-স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেড সরকারের সঙ্গে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের হাই-টেক পার্কগুলোতে গবেষণা কেন্দ্র (আরএন্ডডি) স্থাপনের জন্য কাজ করতে পারে। ভারতীয় ক্যাডেন্স বিশেষজ্ঞরা এই কর্মশালাটি পরিচালনা করেন। ক্যাডেন্স ভিএলএসআই শিল্পকে সর্বশেষ এবং সবচেয়ে ভালো প্রযুক্তি, সরঞ্জাম/সফটওয়্যার, পরিষেবা সরবরাহ করে। ক্যাডেন্স এমন একটি কোম্পানি যা ভিএলএসআই ডিজাইন শিল্পের জন্য সর্বশেষ ও ওয়ান-স্টপ সমাধান সরবরাহ করতে পারে।
এইচটিপিএ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসবিআইটি বাংলাদেশের সভাপতি ও সিইও ডা. জাহাঙ্গীর দেওয়ান (পিএইচডি, এমবিএ), স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের সিইও রেজওয়ানা খান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এইচটিপিএয়ের প্রকল্প পরিচালক এএনএম সফিকুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচটিপিএ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘বাংলাদেশে ভিএলএসআই প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতনতা ও সক্ষমতা তৈরি করার কোন বিকল্প নেই। সরকারি-বেসরকারি খাত, শিল্প ও একাডেমিশিয়ানদের এ জাতীয় সক্ষমতা অর্জনের জন্য একসঙ্গে কাজ করা উচিত। সেই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।’
এইচটিপিএয়ের প্রকল্প পরিচালক এএনএম সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও চাহিদা বিবেচনা করে সরকারকে এ বিষয়ে সব প্রকারের সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।’
এসবিআইটি বাংলাদেশের সভাপতি ও সিইও ড. জাহাঙ্গীর দেওয়ান (পিএইচডি, এমবিএ) বলেন, ‘মানবসম্পদ বৃদ্ধি বিকাশে বাংলাদেশে ভিএলএসআইয়ের বিশাল সুযোগ রয়েছে; আউটসোর্সিংয়ের চাকরি সন্ধান করা এবং শিল্পের বিকাশ নিজস্ব বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি উন্নয়ন করতে হবে। এ ছাড়াও আমি খুবই আনন্দিত যে বর্তমান সরকার ভিএলএসআই খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা নন-রেসিডেন্সিয়াল বাংলাদেশি ও রেসিডেন্সিয়াল বাংলাদেশিরা বাংলাদেশের ভিএলএসআই প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং এ শিল্পের বিকাশে সরকারের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করতে আগ্রহী।’
স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের সিইও রেজওয়ানা খান বলেন, ‘হিউম্যান রিসোর্স হলো এই শিল্পের বিকাশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অর্ধপরিবাহী শিল্পের জন্য জনশক্তি তৈরি করার ক্ষেত্রে ভিএলএসআই একটি অন্যতম প্রযুক্তি। বৃহত্তর, মাঝারি ও ছোট আকারের প্রকল্পগুলোতে কাজ করার জন্য আমাদের আইসিটি বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী ও কম্পিউটার বিজ্ঞানীর দক্ষতা এবং জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। যা আমাদের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে এবং আমাদের আইসিটি রফতানির পরিমান বাড়াবে। এই আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আমরা লক্ষ্য অর্জনে শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ শুরু করেছি আমরা।’