‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং ফিনটেক বাংলাদেশ’ শিরোনামে আগামী ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সিটিওদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা সিটিও টেক সামিট-২০১৯’। রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এস চৌধুরী হলে দিনব্যাপী আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবেলায় ফিনটেক এর গুরুত্ব এবং কর্মক্ষেত্রে এর প্রয়োগ সংক্রান্ত সম্ভাবনা এবং প্রতিবন্ধকতা নিয়ে দেশের সিটিওদের পারস্পারিক মতবিনিময় এবং প্রযুক্তিপ্রদর্শনই এই ‘সিটিও টেক সামিট-২০১৯ এর মূল উদ্দেশ্য।
এ উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার, ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. ইজাজুল হক, ফোরামের প্রতিষ্ঠানকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদুল বারী , যুগ্ম সম্পাদক এবং সামিটের আহবায়ক মোহাম্মদ আলী, সামিটের যুগ্ম আহবায়ক এবং কোষাধ্যক্ষ মো: মইনুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য আজিম ইউ হক, নির্বাহী সদস্য এবং ‘সিটিও টেক সামিট- ২০১৯’ এর সমন্বয়ক গোপাল চন্দ্র গুহ রায়।
সংবাদ সম্মেলনে সামিটের আহবায়ক মোহাম্মদ আলী জানান, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধাকে কাজে লাগানো এবং সৃষ্ট সমস্যা মোকাবেলায় ফিনটেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্লকচেইন, বিটকয়েন. বিগডাটা, সাইবার নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রয়োগে আমরা সিটিওরা একদিকে যেমন আগ্রহী অপরদিকে এ প্রযুক্তিগুলোতে নিজেদের অবস্থান সহ প্রায়োগিক সুবিধা অসুবিধাও বিবেচ্য।
এক্ষেত্রে সচেতনতা এবং সক্ষমতা দুই-ই প্রয়োজন। এধরনের আয়োজনে পারস্পারিক মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয় ফলে পারস্পারিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সমস্যা মোকাবেলায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত প্রযুক্তিবিদগণ সহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সরকারের নীতিনির্ধারক, গবেষক এবং শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশে দেশের প্রায় প্রতিটি খাতেই প্রযুক্তির প্রয়োগ অপরিহার্য।
আর এই কাজটিকে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা অর্থাৎ ব্যবসায়িক কাজে প্রযুক্তি প্রয়োগ ব্যবসায়িক উন্নয়ন বা সক্ষমতা বাড়াবার কাজটির পূর্ণ তদারকিতে থাকেন একজন সিটিও। একজন সিটিওকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তিতে নিজেদের অভ্যস্ততা, সাইবার জগতের সুবিধা এবং প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়।
যেহেতু প্রযুক্তি প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিটিওদের নিজেদের অভিজ্ঞতার আদান প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তি সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি আর এর জন্য প্রয়োজন প্লাটফর্ম। সিটিও ফোরাম দীর্ঘদিন ধরে এই প্লাটফর্ম তৈরির কাজটিই করে আসছে সফলতার সঙ্গে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের এ আয়োজন।
এবারের আয়োজনে দেশের সিটিওরা আরও কিভাবে একে অন্যের সহায়তায় তথ্যপ্রযুক্তিতে সক্ষমতা অর্জন সহ বিরাজিত সমস্যাগুলো মোকাবেলা করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। এবং সরকারের রূপকল্প- ২০২১ বাস্তবায়নে প্রযুক্তি প্রতিবন্ধকতা এবং সমাধানের উপায়গুলো তুলে ধরা হবে।
দেশের সিটিওদের মধ্যকার সম্পর্কে আরও জোরদার করাও এই সামিটের অন্যতম লক্ষ্য। এছাড়াও মেলায় ব্লকচেইন, সাইবার সিকিউরিটি, আইওটি সহ নতুন নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে ৬ টি সেমিনার যেখানে দেশ বিদেশী মোট ৪০ জন বক্তা উপস্থিত থাকবেন।
সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার বলেন, সিটিও টেক সামিট ২০১৯ এর উদ্যোগ নিতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট গণ্যমান্য এবং নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিগণ একত্রিত হচ্ছেন, যা আমাদের কমিউনিটি উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি। বর্তমানে যে ইমার্জিং টেকনোলজি নিয়ে আমরা কথা বলছি সে প্রযুক্তির সফল ব্যবহার কিভাবে করা যায় এটা গুরুত্বপূর্ণ।
এ ধরনের আয়োজন এই বিষয়গুলোর উন্নয়নে কার্যকরী বলে আমরা মনে করি। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের আয়োজনে সাইবার হুমকি, সাইবার নিরাপত্তা, ব্লকচেইন, বিটকয়েন, ই-কমার্স এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
গত কয়েক বছর সিটিওদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হলেও এবার আরও বড় পরিসরে সিটিও সামিট আয়োজন করা হবে। দেশের সিটিওদের দক্ষতা উন্নয়নে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করেন আয়োজকরা।