বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথতার সঙ্গে সঙ্গে স্মার্টফোন ব্যবসায় প্রবৃদ্ধির গতি অনেকটা কমে এসেছে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী ৩৮ কোটি ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাকল্যে দুই লাখ ইউনিট বেশি। ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী ৩৭ কোটি ৯৮ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছিল। এ সময় স্যামসাং, হুয়াওয়ে, রিয়েলমি, টেকনো তুলনামূলক ভালো ব্যবসা করলেও বিনিয়োগকারীদের আশাহত করেছে অ্যাপল, অপো, শাওমি, ভিভোর মতো কয়েকটি টেক জায়ান্ট।
গত প্রান্তিকে বিশ্বের সেরা ৫ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড
স্যামসাং
চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে স্যামসাং বেশ ভালো ব্যবসা করেছে। এ সময় দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানিটির স্মার্টফোন সরবরাহে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। এর মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের এক-পঞ্চমাংশ হিস্যা স্যামসাং নিজের দখলে রেখেছে। মূলত বিশ্বজুড়ে নোট ১০ ও গ্যালাক্সি এ সিরিজের স্মার্টফোনের তুমুল জনপ্রিয়তার কল্যাণে লাভজনক একটি প্রান্তিক পার করেছে স্যামসাং। সব মিলিয়ে চলতি বছরটা স্যামসাং প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় পার করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের ডিজাইন উন্মোচন করে স্যামসাং টেক জগতে আলোচিত হয়েছে।
হুয়াওয়ে
চীনের সবচেয়ে বড় স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ে। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোন সরবরাহে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেকর্ড ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। যদিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে ভীষণ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে হুয়াওয়ে। তবে চীন, ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলোয় হুয়াওয়ের জনপ্রিয়তা এখনো আকাশচুম্বী। মূলত এশিয়ার বাজারের কারণে বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ভালো ফল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি ফোল্ডেবল স্মার্টফোন নিয়ে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে হুয়াওয়ে।
অ্যাপল
বছরের তৃতীয় প্রান্তিক ভালো কাটেনি টেক জায়ান্ট অ্যাপলের। এ সময় বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে আইফোন সরবরাহ আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৪ শতাংশ কমেছে। বিশেষত বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীনে বড় ধরনের বাজার হিস্যা হারিয়েছে আইফোন। ফলে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে অ্যাপলের রাজস্ব আয়ও কমেছে ১১ শতাংশ। নতুন চালু হওয়া আইফোন ১১ সিরিজের হাত ধরে বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল।
অপো
গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাজারে ৩ কোটি ২৭ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছিল অপো, যা পণ্যটির বাজার হিস্যার ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছরের একই সময়ে অপো ৩ কোটি ৩৯ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছে। এর মধ্য দিয়ে স্মার্টফোনের বৈশ্বিক বাজার হিস্যার ৮ দশমিক ৯ শতাংশ দখলে রেখেছে অপো। প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় চলতি বছর শেষ করবে বলে আশা করছে ব্র্যান্ডটি।
শাওমি
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে স্মার্টফোন সরবরাহ কমেছে শাওমির। এ সময় চীনা ব্র্যান্ডটি বিশ্ববাজারে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ১৭ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছে। গত বছরের একই সময়ে শাওমি ৩ কোটি ৩৩ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছিল। চীনের বাজারে হুয়াওয়ের ক্রম উত্থানে শাওমির অবস্থান অনেকটাই ম্লান হয়েছে। তবে ভারতের বাজারে এখনো ব্র্যান্ডটি অবস্থান ধরে রেখেছে।