দেশীয় পন্যের প্রচারণা ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে উই গ্রুপ। দেশি পণ্য নিয়ে ই-কমার্সে কাজ করেন তাদের জন্য উই গ্রুপ দুর্গ হবে বলে টেকজুমের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন রাজীব আহমেদ ।
তিনি আরও বলেন দেশি পণ্য নিয়ে অনলাইনে কাজ করেন তাদের জন্য উই গ্রুপ সব থেকে ভালো জায়গা।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : উই গ্রুপে কেন হঠাৎ করে একটিভ হওয়ার প্রয়োজন মনে করলেন?
রাজিব আহমেদ : দুটি কারন আছে। প্রথমত উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স এর প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা আমাকে উইতে একটিভ হতে অনুরোধ করে কারন এটি প্রায় মরে যাচ্ছিল অভ্যন্তরীণ নিস্ক্রিয়তায় এবং বাইরের চাপে। ই-ক্যাবে আমি ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ইনেকটিভ হয়ে পরি এবং এরপর প্রায় ২০ মাস ই-কমার্সের বাইরে ছিলাম। ই-ক্যাবের প্রায় ১০০ জন মেম্বার সব সময় আমাকে অনুরোধ করে এসেছে আবার ই-কমার্সের সাথে থাকার জন্য যাতে করে তারা আমার সংস্পর্শে থাকতে পারে। আমার নিজেরও কিছুটা মনে হয়েছে যে ই-কমার্স নিয়ে আমার ২০ বছরের জ্ঞান আর গত ৫ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হয়তো ভাল কিছুর ভিত তৈরি করা সম্ভব।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : নারী উদ্যোক্তাদের গ্রুপে আপনি কেন হাল ধরলেন?
রাজিব আহমেদ : উইয়ের মত কিছু করার জন্য নিশাকে আমি ২০১৬ সাল থেকে বারবার বলেছি। আমি ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট ছিলাম তখন এবং নিশা ইসি কমিটিতে আমার সাথে ছিল একজন ডিরেক্টর হিসেবে। তাই উই আসলে যতখানি নিশার প্রায় ততখানি আমার আইডিয়া। আমি হাল ধরার পর এখানে ই-কমার্স নিয়ে জানার বিশেষ করে লেখাপড়ার দিকে বেশি মন দিয়েছি। তাছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের অনেকের বিক্রি হয়তো খারাপ না কিন্তু তারা পুরাই ফেসবুক নির্ভর, ট্রেড লাইসেন্স তো দূরের কথা ডোমেইন হোস্টিং পর্যন্ত নেই। আমার মনে হয়েছে যে এদিকে আমি ভাল অবদান রাখতে পারবো। আর আমার হাল ধরার ফলে এটি আর এখন নারী উদ্যোক্তাদের গ্রুপ নেই। সবার গ্রুপে পরিণত হয়েছে সবাই উপকৃত হয়েছে।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : আপনার একটিভিটির ফলে উই নারী উদ্যোক্তারা কিভাবে উপকার পাচ্ছে?
রাজিব আহমেদ : এ প্রশ্নের উত্তর উই গ্রুপের মেম্বাররাই দিতে পারবেন। তবে আমার মনে হয় যে উই এর কারনে দেশী পণ্যের ই-কমার্সের বাজার বড় হয়েছে। এর থেকে ভাল উপকার আর কি হতে পারে? তাছাড়া বাংলাদেশের ই-কমার্স নিয়ে গত ৫ বছরে আমার যে ধরনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তা একক ব্যক্তি হিসেবে অন্য কারো আছে বলে মনে হয় না। তাই এদিকেই উইয়ের মেম্বাররা লাভবান হচ্ছে। ই-ক্যাবের সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার যে সুনাম, যোগাযোগ, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা রয়েছে তার সবটূকুই আমি গত ১০০ দিন ধরে উইয়ের পেছনে ব্যয় করেছি। জামদানী নিয়ে কাকলি আপু এক টানা ৪০ দিন লিখে যান এবং এরপর আমি উইতে জামদানী ওয়েভ বা ঢেউ তোলার চেষ্টা করি। এখন উইতে জামদানী নিয়ে না হলেও ৫ হাজার পোস্ট আছে। জামদানী নিয়ে জানার জন্য সারা দুনিয়ায় উই সেরা জায়গা।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : নারী উদ্যোক্তাদের গ্রুপে ছেলেদের একটিভ করালেন কেন? তারা এখান থেকে কিভাবে উপকৃত হতে পারবে?
রাজিব আহমেদ : ছেলেরা থাকাতে বেশ কিছু সুবিধা হয়েছে। তারা ইভেন্ট অর্গানাইজে সাহায্য করছে। গ্রুপকে একটিভ করতে কমেন্ট করে অনেক অবদান রাখছে। সর্বোপরি অনেক ছেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করছেন। আবার হাসানুজ্জামান সুজন ভাইয়ের মত কয়েক জন আছেন যারা হয়তো মিস্টির মত এমন পণ্য বিক্রি করছেন সুনামের সাথে যার খুব দরকার ছিল উইতে।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : উই নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি?
রাজিব আহমেদ : উই নিয়ে আমার কোন স্বপ্ন নেই। আমার স্বপ্ন দেশী পণ্য নিয়ে। আমি চাই আগামী এক বছরের মধ্যে ই-কমার্সে ডেলিভারির অন্তত অর্ধেক দেশী পণ্য হোক। উই দিয়ে এই চেষ্টার সূচনা করলাম মাত্র। অনেকেই এবার তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে এটি কঠিন কিছু হবে না।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : উই গ্রুপের দেশি পণ্য নিশ কিভাবে বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেন?
রাজিব আহমেদ : উই গ্রুপকে পুরাই দেশী পণ্যের গ্রুপ বানিয়ে ফেলতে পেরেছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে। ফলে এখানে আর স্বপ্ন বা বাস্তবায়নের ব্যপার নেই। এখানে দেশী পণ্য ছাড়া আর কিছু নেই, আর কিছু নিয়ে পোস্ট দেয়া যায় না।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : গ্রুপে নারী উদ্যোক্তাদের চেয়ে সাধারণ মেম্বারদের একটিভিটি বেশি এর কারণ কি এবং সাধারণ মেম্বাররা কিভাবে উপকৃত হচ্ছে?
রাজিব আহমেদ : এটি আমার যে কোন গ্রুপের কমন বৈশিষ্ট্য। বাংলাতে টাইপ করতে শিখেছে ফেইসবুকে অনেক লোক আমার পাল্লায় পরে। তাই তারা আমি যে গ্রুপে একটিভ থাকি সেখানে থাকার চেষ্টা করে। তারা অনেকেই ছাত্র-ছাত্রি ঢাকার বাইরে থাকে।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : ১০০ দিনের অর্জন কি?
রাজিব আহমেদ : ই-কমার্সের দেশী পণ্যকে ফেসবুকের অনেক গ্রুপ এবং পেইজ সিরিয়াস ভাবে নিয়েছে। উইয়ের মেম্বাররা ই-কমার্স নিয়ে অনেক জেনেছে। যে কোন দিক থেকে উইয়ের ফেসবুক গ্রুপটি ই-কমার্সে এখন বাংলাদেশের সেরা, একটিভ ও তথ্যবহুল গ্রুপ। দেশী পণ্য বিক্রি হচ্ছে উইতে প্রতিদিন প্রতি ঘণ্টায়।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন :ধন্যবাদ techzoom.tv কে সময় দেওয়ার জন্য
রাজিব আহমেদ : আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।