ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের বোন ও ফেসবুকের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা র্যান্ডি জাকারবার্গ। সম্প্রতি এক বক্তৃতায় তিনি জানিয়েছেন, কেন ব্যাপক সফলতার পরও ভাইয়ের গড়া প্রতিষ্ঠান ছাড়লেন। সেই সাথে জানিয়েছেন, প্রথম দিনের ফেসবুক নিয়ে সংগ্রাম করার দিনগুলোর কথাও।
ফেসবুক ছাড়ার পর ২০১৪ সালে ‘জাকারবার্গ মিডিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন র্যান্ডি জাকারবার্গ। এছাড়া ডট কমপ্লিকেটেট ও ডট অ্যানিমেশন নামের দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি।
অ্যাডএশিয়া ২০১৯ নামের একটি বাণিজ্যিক সম্মেলনে অংশ নিতে সম্প্রতি পাকিস্তান গিয়েছিলেন র্যান্ডি। লাহোরের অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে এক ঘণ্টার একটি বক্তৃতা করেন তিনি। ভালো বক্তা হিসেবে খ্যাতি আছে র্যান্ডির। পুরো একঘন্টা শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে শুনেছে তার বক্তৃতা।
নিজের জীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে র্যান্ডি জাকারবার্গ বলেন, আমি মার্কেটিং প্রধান হিসেবে আমার ভাইয়ের সাথে(মার্ক) কাজ করতে ইচ্ছুক ছিলাম না। র্যান্ডি বলেন, আমরা মাত্র ১২জন সদস্য নিয়ে শুরু করেছিলাম। আজ ফেসবুকের ১০২টি অফিস আছে। কয়েক হাজার কর্মী কাজ করে এই প্রতিষ্ঠানে।
তিনি বলেন, ফেসবুকের হেড অব মার্কেটিং হিসেবে আমার কোন বাজেট ছিল না। আমরা আবেগ দিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছি, দিন-রাত পরিশ্রম করেছি।
র্যান্ডি বলেন, সঙ্গীতের প্রতি আমার প্রচণ্ড ভালোবাসা ছিলো। সেই ভালোবাসা থেকে ফেসবুক লাইভ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমাদের প্রথম লাইভে দর্শক ছিলো মাত্র দু’জন- আমাদের বাবা ও মা। আর কেউ দেখেনি সেই প্রথম ফেসবুক লাইভ। পদক্ষেপটি পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলো।
তবে এর এক সপ্তাহ পর এক বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তাকে ফোন করে ফেসবুক লাইভে গান গাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন বলে জানান র্যান্ডি জাকারবার্গ। এরপর তার পথ ধরে অনেকে বিখ্যাত ব্যক্তিরা লাইভে যোগ দেন এবং পদক্ষেপটি সুপারহিট হয়।
র্যান্ডি বলেন, যাত্রা শুরুর মাত্র ৪ মাসের মাথায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জনগনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে ফেসবুক লাইভে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বর্তমানে বিশ্বে আড়াইশ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী আছে বলেও জানান তিনি।
র্যান্ডি বলেন, তবে এই সাফল্যের পরও কেন আমি ফেসবুক থেকে সরে গেছি সেই প্রশ্ন অনেকেই করেন। আসলে আমার বিশ্বাস ছিলো, সিলিকন ভ্যালির আর দশটি মেয়ের মতো কোন প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী হয়ে থাকার জন্য আমার জন্ম হয়নি। আমি আমার নিজের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করতে চেয়েছি।
ফেসবুকের মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক ও মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার আগে ইন্টারনেট উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি ছিল র্যান্ডির। বর্তমানে তিনি নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলা ব্যবসায় নিয়ে কাজ করছেন।
বক্তৃতায় র্যান্ডি পাকিস্তানের নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফ জাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে পাকিস্তানের দুই মহান নারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। র্যান্ডি বলেন, পাকিস্তান সব সময়ই তার নারীদের যথাযথ সম্মান দিয়ে আসছে।