দক্ষ সাইবার নিরাপত্তা কর্মী খুঁজে বের করতে অ্যাট বাংলাদেশ-এর আয়োজনে দেশে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ক্যাসপারস্কি সাইবার সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জ ২০১৯’ শীর্ষক প্রতিযোগিতা।
রোববার রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটতে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী প্রতিযোগিতায় নির্ধারিত ৩৪০টি বাগের (নিরাপত্তা ত্রুটি) মধ্যে ১৬টি চিহ্নিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ‘ইএসবিএইচ’। বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন মাহমুদুল হাসান হৃদয়, অমিত হাসান। একই সংখ্যক নিরাপত্তা ত্রুটি চিহ্নিত করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে পাবনা পলিটেকনিকের দল ‘ইরর স্কোয়াড বাংলাদেশ’। দলের সদস্যরা হলেন প্রিয়াল ইসলাম, আলওয়ারেস নাঈম, তাসদির আহমেদ। ১২টি বাগ চিহ্নিত করে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে সেন্টার ফর টেকনোলজি ট্রান্সফার এর টিম ‘৩০২’। এই দলের সদস্যরা হলেন আসিফ হোসেন ও রাসেল ভূইয়া।
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের প্রত্যেককে দেওয়া হয় একটি করে ল্যাপটপ, প্রথম রানার্স আপ দলের প্রত্যেককে দেওয়া হয় স্মার্টফোন এবং দ্বিতীয় রানার্স আপ দলের জন্য পুরস্কার হিসেবে ট্যাবলেট পিসি। এর পাশাপাশি দেওয়া হয় ক্রেস্ট এবং সনদপত্র। এ প্রতিযোগিতায় দেশের পাশাপাশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল কিন্তু বর্তমানে আমরা প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়ে যাচ্ছি। ২০০৮ সালেও বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৮ লাখ এবং বর্তমানে এর সংখ্যা ১০ কোটি। তবে এর মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তার জন্য ২০২১ সালের মধ্যে আমরা ৫জি নিয়ে আসবো। যার গতি শুরু হবে জিপিএস দিয়ে। তাই ইন্টারনেটের সিকিউরিটি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আর এ ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দক্ষ সাইবার নিরাপত্তা কর্মী খুঁজে পাওয়াটা সহজ হবে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিও’র সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ এইচ কাফি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজির (বিডব্লিউআইটি) সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানা খান, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের হেড অব সফটওয়্যার বিজনেস মীরসাদ হোসেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান প্রফেসর ড. তৌহিদ ভূইয়া, ক্রিয়েটিভ আইটি লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক শম্পা পারভিন, ওয়ালটন ডিজিটেক এর হেড অব ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট হৃদয় খান, আইসিসি কমিউনিকেশনের মহাব্যবস্থাপক আতিকুর রহমান, অ্যাট বাংলাদেশ’র সিকিউরিটি লিড মাহমুদুল হাসান শাওন সহ প্রমুখ।
গত ১০ ডিসেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাক্টিভেশনের মাধ্যমে শুরু হয় এ আয়োজন। এরপর রাজশাহী, রংপুর, কুমিল্লাসহ ঢাকার ২০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে ২৫০টি দল নিবন্ধন করে এবং এই নিবন্ধনকৃত দল থেকে অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৫০টি দল ‘ক্যাসপারস্কি সাইবার সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জ ২০১৯’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অংশগ্রহণ করেন। রোববার রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ধানমন্ডি ক্যাম্পাসে প্রতিযোগিতাটির সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এবারের আয়োজনে মূল প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘ওয়েব ভালনারেবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট’। পাশাপাশি ক্যাসপারস্কি বাগ বাউন্টিং প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে অর্থ জিতে নেওয়ার সুযোগ পায় প্রতিযোগীরা।
‘বি দ্য আলটিমেট সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট’ স্লোগানে প্রতিযোগিতার টাইটেল স্পন্সর ছিল ক্যাসপারস্কি, পাওয়ার্ড বাই স্পন্সর ওয়ালটন কম্পিউটার। গোল্ড স্পন্সর ইভ্যালি। এছাড়া কো-স্পন্সর ছিল ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট ও আইসিসি কমিউনিকেশন লিমিটেড এবং এসসিএসএল। স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বেসিস, আইএসপিএবি এবং বাক্য।