মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে বেকায়দায় থাকা হুয়াওয়ে এবার নিজস্ব অ্যাপ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর ব্লুমবার্গ।
গত মে মাসে হুয়াওয়ের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। যে কারণে হুয়াওয়ের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম এবং ডিভাইস ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া নিজেদের পণ্য উন্নয়নে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর কাছ থেকে সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও সেমিকন্ডাক্টর পণ্য ক্রয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এতে নিজেদের স্মার্টফোনে গুগলের জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের সুযোগ হারায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর পরই তা ৯০ দিনের জন্য শিথিল করা হলে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারের বাধা কেটে যায়। অবশ্য হুয়াওয়ে বরাবরই বলে আসছে, তারা নিজেদের ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমই ব্যবহারে আগ্রহী। তবে তাদের হাতে অ্যান্ড্রয়েডের বিকল্পও প্রস্তুত আছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ‘হারমনি’ অপারেটিং সিস্টেম উন্মোচন করেছে। জনপ্রিয় মেট সিরিজের নতুন দুই ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের মাধ্যমে সে বিকল্প পথেই হেঁটেছে প্রতিষ্ঠানটি।
হুয়াওয়ের ফোনগুলো পশ্চিমা দেশগুলোয় জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণ হলো অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা প্লে স্টোর, জিমেইল এবং গুগল ম্যাপের মতো পরিষেবা এবং অন্যান্য অ্যাপে সহজে প্রবেশ করতে পারে। তবে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরে হুয়াওয়ে কোন গুগল অ্যাপ্লিকেশন ছাড়াই প্রথম ফ্ল্যাগশিপ ফোন বাজারে আনে। চলতি বছরের মার্চে গুগলের পরিষেবা ছাড়াই হুয়াওয়ের আরেকটি ফোন বাজারে আসার কথা আছে। যদিও পুরনো হুয়াওয়ে ফোনে এখনো গুগলের প্লে স্টোর ব্যবহার করা যায়।
তবে নতুন ফোনে গুগল সমর্থিত অ্যাপ না থাকায় ব্যবহাকারীরা অসুবিধার মধ্যে আছেন। এ কারণে নিজস্ব অ্যাপ তৈরিতে জোর দিচ্ছে হুয়াওয়ে। গত বুধবার লন্ডনে অ্যাপ ডেভেলপারদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব অ্যাপ গ্যালারি তৈরি করতে ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয়ের ঘোষণা দেয়।
হুয়াওয়ের কনজিউমার সার্ভিসের ইউরোপিয়ান ভিপি জেমি গঞ্জালো বলেন, হুয়াওয়ে এমন অ্যাপ ইকোসিস্টেম তৈরির চেষ্টা করছে, যা সিলিকন ভ্যালির টেকজায়ান্টদের চেয়ে বেশি নিরাপদ হবে।