আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেছেন, সরকার তরুণদের আইসিটি খাতের উন্নয়নে সব রকমের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্ঠায় এগিয়ে এসেছে। প্রতিটি জেলায় যেমন হাইটেক পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার, ঠিক তেমনি প্রতিটি জেলায় দেশীয় স্টার্টআপদের জন্য ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরির পরিকল্পনাও গ্রহণ করছে সরকার।
তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে শুরু হতে যাওয়া ‘ন্যাশনাল হ্যাকাথন অন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিস’ উপলক্ষে শনিবার ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, হাইটেক পার্কগুলোতে যেন স্টার্টআপদের জন্য অন্তত একটি ফ্লোর ডেডিকেটেড হিসেবে থাকে সেই লক্ষ্যেই আইসিটি বিভাগ কাজ করছে। ২০২১ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগ বেশ তৎপরতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আইসিটি বিভাগের ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ-আইডিয়া’ প্রকল্পের উদ্যোগে ও বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন ও টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেডের সহযোগিতায় আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘ন্যাশনাল হ্যাকাথন অন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিস’। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার যার ধারাবাহিকতায় শুরু হচ্ছে এই হ্যাকাথন।
হ্যাকাথনের জন্য দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পেইন আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। তিনি জানান, কৃষি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক অনেক কাজ হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। দেশকে শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নয় তথ্যপ্রযুক্তিতেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আইসিটি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্পের উপ-পরিচালক কাজী হোসনে আরা বলেন, দেশের সকল স্থানে সরকার তার পরিপূর্ণ সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ’ ব্যানারে আইডিয়া প্রকল্প দেশীয় উদ্যোক্তাদের ফান্ডিং করাসহ মেনটরিং, গ্রুমিং ইত্যাদি কাজ করছে। এতে বাংলদেশে খুব শিগগির একটি স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরি হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। তিনি জানান যে, হ্যাকাথনের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে স্টার্টআপ বাংলাদেশ-আইডিয়া প্রকল্পের ওয়েবসাইটে (www.startupbangladesh.gov.bd)। হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. মো. নুরুল হক তার বক্তব্যে এমন একটা আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পাশে রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের কৃষির সকল সমস্যার সমাধান হবে কম্পিউটারের মাধ্যমে।
অতিথিদের বক্তব্য শেষে হ্যাকাথন সম্পর্কিত একটি কি-নোট উপস্থাপন করেন আইডিয়া প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক আর এইচ এম আলাওল কবির। পরে উপস্থিত তরুণরা হ্যাকাথনের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেয়। ময়মনসিংহের এই ক্যাম্পেইনে প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাবৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় আরো একটি ক্যাম্পেইন। রাজশাহী বিভাগের প্রায় ৪ শতাধিক অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে আয়োজিত এই ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ভিসি প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম শেখ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. জহুরুল ইসলাম সরকার এবং রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. বশির আহমেদ। এই অনুষ্ঠানে হ্যাকাথনের কি-নোট উপস্থাপন করেন আইডিয়া প্রকল্পের পরামর্শক এ বি এম মনিরুল ইসলাম।