আইসিটি বিভাগের “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (iDEA)” তার “স্টার্টআপ বাংলাদেশ” ব্যনার নিয়ে আয়োজন করছে “ন্যাশনাল হ্যাকাথন অন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিস”। “Think. Hack. Solve.” স্লোগানটিকে সামনে রেখে দেশের ১০টি জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যার তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্ভাবনী সমাধানের লক্ষ্যে এই হ্যাকাথনটি অনুষ্ঠিত হবে।
সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ১০টি স্থানে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পেইন। এরই অংশ হিসেবে আজ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয় হ্যাকাথনের শেষ ক্যাম্পেইন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড অন্ট্রপ্রিনিউরশীপ সেন্টার এর ভাইস চেয়ারম্যান ড. খন্দকার বজলুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রফেসর ড. এম কায়কোবাদ, আইআইটি এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: শরীফুল ইসলাম এবং iDEA প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন রাশেদুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক, ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড অন্ট্রপ্রিনিউরশীপ সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রফেসর ড. এম কায়কোবাদ বলেন, আমাদের দেশের সন্তানেরা নানারকম আইডিয়া নিয়ে চিন্তা করে। দেশে অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে ও একই সাথে আমাদের দেশে মেধাও আছে। সেগুলো সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। তরুনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন নিজেকে প্রমান করতে হবে। জীবনে কাউকে ছোট করা যাবে না। দেশে অনেক ভালো ভালো আইডিয়া আছে যেগুলো প্রডাক্ট আকারে পরিনত করতে হবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রোগ্রামিং এর ক্ষেত্রে অনেক ভালো করছে। তিনি বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির বিষয় উল্লেখ করে দেশের তরুণদের প্রশংসা করেন।
আইআইটি এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: শরীফুল ইসলাম অনষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে তার বক্তব্যে সরকারের আইসিটি সেক্টরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। দেশের উন্নয়নে সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ সকল উদ্যোগ প্রশংসার দাবীদার বলে তিনি মনে করেন।
iDEA প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশের সমস্যা আমাদের ছেলেমেয়েরা সমাধান করবে। আমরা চাই আমাদের ছাত্ররা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেতৃত্ব দিবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড অন্ট্রপ্রিনিউরশীপ সেন্টার এর ভাইস চেয়ারম্যান ড. খন্দকার বজলুল হক তার বক্তব্যে বলেন যে, সরকারের সাথে একাডেমিয়ার সংযোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে যা প্রশংসাজনক। আমাদের ১ম শিল্প বিপ্লব সফল না হলে ২য় শিল্প বিপ্লব আসত না। ১ম, ২য় ও ৩য় শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্রে আমরা যেমন সফলতা পেয়েছি ঠিক অপরদিকে আমাদের অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিও হয়েছে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব পৃথিবীকে সমৃদ্ধির দিকে নিবে এবং ক্ষতির দিক কমিয়ে আনবে। সরকার ৪র্থ শিল্প বিপ্লবকে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই ভালো সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, আমরা Hardwork করি কিন্ত আমাদের Smart Work করতে হবে। তিনি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড নিয়ে আলোচনা করেন। তরুনদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান আজকের যে ডিভিডেন্ড নিয়ে কথা হচ্ছে তার জন্য আমাদের সময় আছে মাত্র ১৫ বছর। তরুনদের একসাথে কাজ করতে হবে। প্রযুক্তির শিক্ষা মহৌষধ হিসেবে কাজ করবে। দেশকে সমৃদ্ধের পথে এগিয়ে নিতে তিনি তরুনদের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড অন্ট্রপ্রিনিউরশীপ সেন্টার এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদুর রহমান। তিনি বলেন যে, কোন প্রকল্প বা উদ্যোগ ছোট থেকেই শুরু হয়। তাই উদ্যোগ বাস্তবায়নে অবশ্যই মনোযোগী হতে হবে। বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক সাথে কাজ করতে পারলে অনেক ভালো করা যাবে। পৃথিবীতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু যে কোন উদ্যোগ বাস্তবায়নে যোগ্য সিইও এরও প্রয়োজন আছে। আমাদের প্রফেশনাল সিইও দরকার আছে।
আগামী ২৮-২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ ঢাকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে সেরা ৫০ টি টিম নিয়ে আয়োজিত হবে হ্যাকাথন এবং পরবর্তীতে সেরা ১০ টি টিমকে চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষনা করা হবে। হ্যাকাথনে অংশ নিতে আবেদন করা যাবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত। এই হ্যাকাথনটি আয়োজন করতে সহোযোগিতায় আছে “বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন” ও “টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেড (TechM)”। হ্যাকাথনের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে স্টার্টআপ বাংলাদেশ- iDEA প্রকল্পের ওয়েবসাইট www.startupbangladesh.gov.bd -এ।