দেশে ক্রমেই গ্রাহক বাড়ছে স্মার্টফোনের। বছরে স্মার্টফোন ও ফিচার ফোনের চাহিদা প্রায় তিন কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। আর সে সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে মেড ইন বাংলাদেশ হ্যান্ডসেট উৎপাদন বাড়ছে আর কমছে আমদানি।
মাত্র দুই বছর আগে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ এখন স্মার্টফোন উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। গত বছর যতো স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে তার ৬২ শতাংশ উৎপাদিত হয়েছে বাংলাদেশে স্থাপিত কোনো না কোনো কারখানা থেকে।
চলতি বছরের মধ্যে বাজারে স্মার্টফোনের চাহিদা দেশীয় কারখানা থেকেই সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন স্থানীয় মোবাইল কারখানা মালিকরা।
২০১৯ সালে দেশে সব মিলিয়ে ৫৪ লাখ স্মার্টফোন উৎপাদিত হয়েছে। আরও ২৪ লাখের মতো হয় বৈধ পথে আমদানি হয়েছে, নয়তো অবৈধভাবে দেশে ঢুকেছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, ২০১৮ সালে দেশে হ্যান্ডসেট আমদানি করা হয়েছে এক কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ২৪ লাখ ৪৪ হাজার। আর ২০১৯ সালে দেশে হ্যান্ডসেট আমদানি করা হয়েছে এক কোটি ৩৫ লাখ। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৯ লাখ ৬৭ হাজার; অর্থাৎ এক বছরে দেশে হ্যান্ডসেট আমদানি কমেছে ৩৫ লাখ। আর স্মার্টফোন আমদানি কমেছে প্রায় ১৪ লাখ ৭৭ হাজার।
এর বাইরে গত বছর দেশে ফিচার ফোন বা বেসিক ফোন বিক্রি হয়েছে আরও ২ কোটি ৫১ লাখ পিস। যার মধ্যে স্থানীয় কারখানায় উৎপাদিত হয়েছে এক কোটি ৪২ লাখ পিস সেট।
হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যমতে, বছরে তিন কোটি সাড়ে ১০ লাখ হ্যান্ডসেটের (ফিচার ও স্মার্ট) চাহিদা আছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে স্মার্টফোনের বাজার রয়েছে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার। যদিও সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে ফিচার ফোন। এর বাজারমূল্য প্রায় ৭০ শতাংশ। আর স্মার্টফোন রয়েছে ৩০ শতাংশ। তবে মূল্যমান অনুযায়ী মোট বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশই রয়েছে স্মার্টফোনের দখলে।
দেশে এখন সব মিলে নয়টি মোবাইল ফোন কারখানা আছে। এর মধ্যে বড় পাঁচটি ব্র্যান্ড আছে যারা এখন আর কোনো স্মার্টফোন আমদানি করছে না। দুটি দেশীয় কোম্পানি ওয়াল্টন এবং সিম্ফোনি ছাড়াও চীনের তিনটি কোম্পানি ট্রানশেন হোল্ডিং, ভিভো এবং অপোও আর কোনো স্মার্টফোন আমদানি করে না। বরং যন্ত্রাংশ আমদানি করেই দেশের বাজারে তাদের চাহিদা মেটাচ্ছে।
মূলত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে প্রথম বাংলাদেশে হ্যান্ডসেট তৈরির যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর শুল্ক কমানো হয়। একই সঙ্গে আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে সরকার।
আর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এসে স্মার্টফোন আমদানি শুল্ক ৩২ শতাংশ থেকে এক লাফে ৫৭ শতাংশ করে দেওয়া হয়। যার ফলে চলতি বছরের শেষের দিকে কারখানা তৈরি করে ভিভো এবং অপো।