এখনকার দিনে অনলাইন জালিয়াতির ঘটনা যেন খুব সাধারণ। আমরা প্রতিদিনই প্রায় খবর পাই উমুক ব্যক্তি হ্যাকারদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। এতদিন পর্যন্ত যত অনলাইন ফ্রডের ঘটনা শোনা গেছে, তাতে স্পষ্ট যে জালিয়াতরা কম বেশি ১০ টি পদ্ধতি অবলম্বন করে মানুষ কে বোকা বানাচ্ছে। আসুন জেনে নিন জালিয়াতদের দ্বারা আপনি কোন কোন ভাবে প্রতারিত হতে পারেন।
ব্যাংকের কর্মী সেজে :
এই পদ্ধতিতে জালিয়াতরা আপনাকে ফোন করে বলবে তারা ব্যাংক থেকে বলছে। তারা আপনাকে বিভিন্ন ভয় দেখাবে এবং আপনার থেকে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতানোর চেষ্টা করবে। আপনি যদি তাদের কথা বিশ্বাস করে তথ্য দিয়ে দেন, তাহলে তারা আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করে নেবে।
লটারি জেতার প্রলোভন দেখিয়ে :
এখানে আপনাকে অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে কল করা হবে এবং কোনো শপিং সাইটের নাম করে লটারি জেতার লোভ দেখানো হবে। তারপর টাকা পাঠানোর কথা বলে আপনার থেকে অ্যাকাউন্ট সহ আধার কার্ডের নম্বর নিয়ে নেবে। এরপর আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার জন্য ফোনে একটি ওটিপি পাঠাবে। আপনি ওটিপি দিয়ে দিলেই কাজ হাসিল করবে হ্যাকাররা।
স্ম্যাশিং :
এই পদ্ধতিতে আপনার ফোনে কোনো শপিং সাইটের নামে ভুয়ো ক্যাশব্যাকের মেসেজ আসে। এই মেসেজে একটি লিংক দেওয়া হয়। যেখানে ক্লিক করলে আপনার থেকে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চাওয়া হবে।
রিমোট অ্যাসিস্ট্যান্স :
এই পদ্ধতিতে জালিয়াতরা Any Desk বা Team Viewer এর অ্যাপ ব্যবহার করে, আপনার ডিভাইসের কন্ট্রোল নিয়ে নেয় এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করে।
জুস জ্যাকিং :
কোনো পাবলিক চার্জিং স্পটে জালিয়াতরা আগে থেকে ম্যালওয়্যার চিপ ইনস্টল করে রাখে। আপনি যখনই চার্জ দিতে শুরু করবেন, সাথে সাথে এই চিপ আপনার ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ করে নেবে।
সিম সোয়্যাপ-
এটির মূল অর্থ সিম কার্ড পরিবর্তন বা সিম কার্ডের ক্লোনিং। এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার ফোনে একটি নতুন সিমের রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া যেতে পারে। নতুন সিম রেজিস্টার হয়ে যাবার পর এই আপনার পুরনো সিম কার্ডটি বন্ধ হয়ে যায় এবং সেই সিম কার্ড থেকে থেকে সমস্ত সিগন্যাল চলে যায়। তারপর আপনার ফোনে নতুন রেজিস্টার্ড হওয়া সিম কার্ডে আসা ওটিপি ব্যবহার করে হ্যাকাররা আপনার ব্যাংকের সমস্ত টাকা চুরি করে।
কেওয়াইসি :
এই পদ্ধতিতে আপনার কাছে একটি কল আসে যাতে জানানো হয়, পেটিএম কাস্টমার কেয়ারের তরফ থেকে ফোন করা হয়েছে এবং আপনার কেওয়াইসি পেন্ডিং আছে। এখনই আপনাকে আপনার কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে, তা না হলে আপনি আপনার পেটিএম ওয়ালেট আর ব্যবহার করতে পারবেন না। এরপর আপনার কাছে একটি টেক্সট মেসেজও পাঠানো হয় যাতে একটি লিঙ্ক থাকে। ওই লিংকে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গেই পেটিএম খুলে যায়। ফোনে থাকা কাস্টমার কেয়ারের ব্যক্তিটি পেটিএমের সঙ্গে সংযুক্ত কার্ডের পিন নম্বর নিজে না চেয়ে আপনাকেই পেটিএমে বসাতে বলে। এই পিন নম্বরটি বসানোর সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায়।
ভুয়ো কাস্টমার কেয়ার নম্বর :
গুগলে জনপ্রিয় কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার নম্বর বদলে নিজের নম্বর দেয় জালিয়াতরা। এবার আপনি ফোন করে কোনো অভিযোগ করলে বা টাকা ফেরত চাইলে, তারা আপনাকে টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে টাকা ট্রান্সফার করে নেয়। এই পদ্ধতিতে বেশিরভাগ সময় ইউপিআই পেমেন্ট মেথডের প্রয়োগ করা হয়।
হোয়াটসঅ্যাপে ভুয়ো অফারের মেসেজ :
এই পদ্ধতিটি আমাদের সকলের জানা। এখানে কোনো জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটের নামে হোয়াটসঅ্যাপে ডিসকাউন্ট অফারের মেসেজ পাঠানো হয়। এর সাথে একটি লিংক দেওয়া হয়। আপনি ওই লিংকে ক্লিক করলে একটি ম্যালিশিয়াস সাইটে রিডাইরেক্ট হন। এবার হ্যাকার আপনার ডিভাইসের কন্ট্রোল নিয়ে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেয়।