সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে সংশোধিত স্থূল রাজস্ব (এজিআর) বকেয়ার ১০ হাজার কোটি রুপি পরিশোধ করেছে ভারতী এয়ারটেল। আরেক কোম্পানি ভোডাফোন আইডিয়া বকেয়ার কত অংশ দেয়া সামর্থ্যে কুলাবে, সেই হিসাব করছে।
রিলায়েন্স জিও বাদে খুব খারাপ সময় পার করছে ভারতের প্রায় সবক’টি টেলিকম সংস্থা। লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো এর মধ্যে রাজস্ব কমিয়ে দেখানোর কারণে আদালতে অভিযুক্ত হয়েছে। গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ভারতী এয়ারটেল, ভোডাফোন আইডিয়া ও টেলিযোগাযোগ দপ্তরদের বকেয়া আদায়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে তাদের বকেয়া পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করতে না পারলে পরিষেবা বন্ধ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
গতকাল ভারতী এয়ারটেল ৩৫ হাজার ৫৮৬ কোটি রুপি বকেয়ার মধ্যে ১০ হাজার কোটি পরিশোধ করেছে। অন্যদিকে ভোডাফোন আইডিয়ার মোট বকেয়া ৫৩ হাজার ৩৮ কোটি রুপি। এর মধ্যে তরঙ্গভাড়া ২৪ হাজার ৭২৯ কোটি ও লাইসেন্স ফি বাবদ ২৮ হাজার ৩০৯ কোটি রুপি।
গত শনিবার ভোডাফোন জানিয়েছে, বকেয়ার কত টাকা এ মুহূর্তে পরিশোধ করা যায়, সেই হিসাব তারা করছে। যদিও এ কোম্পানি আর টিকবে কিনা, তা নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের একটি আবেদন এরই মধ্যে আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনার ওপরই ভোডাফোনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
গত বছর ২৪ অক্টোবর ভারতের সর্বোচ্চ আদালত দেশটির টেলিযোগাযোগ বিভাগকে (ডিওটি) তিন মাসের মধ্যে বকেয়া অর্থ আদায়ের নির্দেশনা দেন। এ পরিস্থিতিতে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ভোডাফোন আইডিয়া লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা। গত ডিসেম্বরেই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলম বিড়লা জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা ছাড়া এত বড় অংকের বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব নয়। বকেয়া টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধে বাধ্য করা হলে অপারেটরটির কার্যক্রম বন্ধের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
তাছাড়া ভোডাফোন আইডিয়া ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রায় ৬ হাজার কোটি রুপি লোকসান দেখিয়েছিল। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো লোকসানের ধারায় টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কোম্পানিটির শেয়ারদরেও পতন ঘটেছে।
পরবর্তী শুনানির দিন, অর্থাৎ ১৭ মার্চের আগে বকেয়ার টাকা মেটানো না হলে টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে।