ডেল টেকনোলজিস ২০৮ কোটি ডলারে নিজেদের আরএসএ সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ বেচে দিতে সম্মত হয়েছে। বিভাগটি কিনতে যাচ্ছে প্রাইভেট ইকুইটি ফার্ম সিম্ফনি টেকনোলজি গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত একটি কনসোর্টিয়াম। আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বৈশ্বিক সাইবার নিরাপত্তা খাতে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি ডেলের আরএসএ সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ। মার্কিন কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির আরএসএ সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের আওতায় রয়েছে আরএসএ আর্চার, আরএসএ নেটউইটনেস প্লাটফর্ম, আরএসএ সিকিউরআইডি, আরএসএ ফ্রড অ্যান্ড রিস্ক ইন্টেলিজেন্স এবং আরএসএ কনফারেন্সের মতো সেবা ও পণ্যগুলো।
বিবৃতিতে ডেল জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী তাদের আরএসএ সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের সাড়ে ১২ হাজার গ্রাহক রয়েছে। আরএসএ কনফারেন্সকে বিশ্বের বৃহৎ কনফারেন্স সেবা হিসেবে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৮২ সালে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা করে আরএসএ। ২০১০ সালে ২১০ কোটি ডলারে প্রতিষ্ঠানটিকে অধিগ্রহণ করে ইএমসি এবং নিজেদের একটি বিভাগ হিসেবে আরএসএ পরিচালিত হয়। ২০১৬ সালে ইএমসির কাছ থেকে আরএসএ অধিগ্রহণ করে ডেল টেকনোলজিস। বৈশ্বিক সাইবার নিরাপত্তা খাতে ব্যবসা জোরদারের যে লক্ষ্য নিয়ে আরএসএ অধিগ্রহণ করেছিল ডেল, তা অপূর্ণ থেকে গেছে। গত অর্ধ দশকে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডেলের ব্যবসায় বাড়তি মাত্রা যোগ করতে পারেনি আরএসএ। যে কারণে বিভাগটি বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডেল।
বিবৃতিতে ডেলের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) জেফ ক্লার্ক বলেন, আরএসএ সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ বিক্রির উদ্যোগ তাদের ব্যবসাকে আরো সহজতর করবে এবং প্রডাক্ট পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আসবে।
তিনি বলেন, আরএসএ ডেলের কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। বিভাগটির কারণে ডেল অটোমেটেড ব্যবসা স্ট্র্যাটেজি ঢেলে সাজানোর সুযোগ পেয়েছে এবং বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোতে ইন্টেলিজেন্ট নিরাপত্তা প্রদান করতে পেরেছে। এছাড়া আরএসএ সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের সহায়তায় বিভিন্ন প্লাটফর্ম এবং ডিভাইসের ডাটা সুরক্ষা সেবা সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে ডেল টেকনোলজিস।
বিবৃতিতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান সিম্ফনি টেকনোলজি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আরএসএ বিশ্বের অভিজাত সাইবার নিরাপত্তা ব্র্যান্ড। বিশ্বজুড়ে এখন সাইবার নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে অনলাইন জনসংখ্যার মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। আমরা আশা করছি, আরএসএর সহায়তায় সাইবার নিরাপত্তা খাতে বিভিন্ন অনলাইন সেবা ব্যবহারকারীদের নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের সমাধান দিতে পারব।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধের জেরে শুধু আইফোন বিক্রি প্রবৃদ্ধিতেই নয়; বৈশ্বিক পার্সোনাল কম্পিউটার (পিসি) বাজারের প্রবৃদ্ধিতেও প্রভাব পড়েছে। গত বছর পিসি বাজারে যে সরবরাহ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল, তা পূরণ হয়নি। ২০১১ সালে বৈশ্বিক পিসি বাজার প্রথমবার উল্লেখযোগ্য সরবরাহ প্রবৃদ্ধির মুখ দেখেছিল। ওই সময় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোয় উইন্ডোজ ১০ হালনাগাদের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়। পরবর্তী সময়ে কম্পিউটিংয়ের সুযোগ-সুবিধা মোবাইল ডিভাইসে যুক্ত হতে থাকলে পিসি বাজারে চাহিদা কমে যায়। এর ফলে চাপে পড়ে কম্পিউটার প্রযুক্তি কোম্পানি ডেল টেকনোলজিস।
গার্টনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এক বছর আগের একই প্রান্তিকের চেয়ে পিসি সরবরাহ ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৭ কোটি ৬ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বৈশ্বিক পিসি বাজারের ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে চীনভিত্তিক লেনোভো। এছাড়া পিসি বাজারের ২২ দশমিক ২ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এইচপি এবং বাজারটির ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ডেল। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে লেনোভো, এইচপি ও ডেল মিলে বৈশ্বিক পিসি বাজারের ৬৫ শতাংশ দখলে নিয়েছে।