এ মাসের শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় সাইবার হামলার চেষ্টা চালিয়েছে হ্যাকাররা। বর্তমান পরিস্থিতিতে আগের তুলনায় সাইবার আক্রমণের হার বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
হ্যাকারদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা ফ্ল্যাভিও অ্যাগিও। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিপক্ষে লড়াইয়ের সময়টিতেই যে সংস্থায় এবং এর অংশীদারদের উপর সাইবার হামলার সংখ্যা বেড়েছে, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। — খবর সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের।
ডব্লিউএইচও-তে সাইবার হামলা প্রচেষ্টাটি প্রথমে নজরে আসে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান ‘ব্ল্যাকস্টোন ল গ্রুপ’-এর আইনজীবি আলেক্সান্ডার উর্বেলিসের। উর্বেলিস জানিয়েছেন, মার্চের ১৩ তারিখের দিকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়টি নজরে আসে তার। “খুব দ্রুতই বুঝতে পারি, মহামারী চলাকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে লক্ষ্য করে চালানো আক্রমণ এটি।” – বলেছেন উর্বেলিস।
তবে, সাইবার হামলার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছেন তা জানেন না উর্বেলিস। এদিকে, ভিন্ন দুটি সূত্রের সন্দেহ যে, হামলাটির পেছনে ডার্কহোটেল নামের পরিণত এক হ্যাকার দলের হাত রয়েছে। ২০০৭ সাল থেকেই সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত ডার্কহোটেল হ্যাকার দলটি।
উর্বেলিসের নজরে আসা সাইটটির মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একাধিক কর্মীর পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে নিশ্চিত করেছেন ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা অ্যাগিও। এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে অ্যাগিও বলেছেন, “ডব্লিউএইচও-কে লক্ষ্য করা এবং সাইবার নিরাপত্তা বিপত্তির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো নম্বর জানানো সম্ভব নয়, কিন্তু আমাদেরকে এবং আরেকজনের ছদ্মবেশে অন্যকে লক্ষ্য করে চালানো এ ধরনের প্রচেষ্টার হার দ্বিগুনের চেয়েও বেশি বেড়েছে।”
গত মাসেই এ ধরনের সাইবার আক্রমণের ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করতে সতর্কবার্তা জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল, সংস্থার ছদ্মবেশে অর্থ এবং স্পর্শকাতর তথ্য চুরি করার চেষ্টা করছে হ্যাকাররা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় হামলার জন্য ডার্কহোটেল হ্যাকার দল দায়ী কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি ক্যাসপারেস্কির বৈশ্বিক গবেষণা প্রধান ও বিশ্লেষক কস্টিন রাইউ। তবে, একই গঠনের ম্যালিশাস ওয়েব কাঠামো যে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্য স্বাস্থ্য সেবা এবং মানবিক সংস্থাগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে তা জানিয়েছেন তিনি।
“এরকম একটি সময়ে, করোনাভাইরাস সম্পর্কিত কোনো প্রতিষেধক বা পরীক্ষার যেকোনো তথ্য অনেক মূল্যবান এবং অনেক আক্রান্ত দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মূল লক্ষ্য।” – বলেছেন কস্টিন রাইউ।
এদিকে, উর্বেলিস জানিয়েছেন, হাজারো করোনাভাইরাস থিমযুক্ত ওয়েবসাইট খোলা হচ্ছে প্রতিদিন, এর মধ্যে অধিকাংশই ম্যালিশাস। “এখনও দৈনিক প্রায় দুই হাজার করে খোলা হচ্ছে। আমি এর আগে কখনও এরকম কিছু দেখিনি।”