করোনাভাইরাস রোধে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত বিশেষ পরিস্থিতিতে ঘরে থাকা সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন ও জরুরি লেনদেনে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে আস্থা রাখছেন।
বিকাশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৩০ মার্চ) এক দিনেই বিকাশে প্রায় ৫৯ লাখ লেনদেন হয়েছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ কোটি টাকা। অর্থ্যাৎ সারাদেশের এ বন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও ডিজিটাল লেনদেনকে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করছেন গ্রাহকরা।
সেই সঙ্গে এ বিশেষ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রতিপালন করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অংকের পি-টু-পি লেনদেনে চার্জ নিচ্ছে না বিকাশ। সেই সঙ্গে মাসিক লেনদেন সীমা ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে এবং প্রথমবার এক হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউটেও কোনো চার্জ নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিশেষ পরিস্থিতিতেও জরুরি সেবা হিসেবে বিকাশের সব সেবা নিরবছিন্ন, নির্বিঘ্ন এবং নিরাপদ রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন বিকাশের সব কর্মী। এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে নগদ টাকা এবং ডিজিটাল মানি সরবরাহও নিশ্চিত করা হয়েছে।
কোথাও না গিয়ে ঘরে বসে বিদ্যুৎ, গ্যাস বিল প্রদান, মোবাইল রিচার্জ, সেন্ডমানি, অ্যাডমানি, পেমেন্টের মত সেবাগুলো জরুরি এ অবস্থায় গ্রাহকের জন্য বাড়তি সুবিধা বয়ে এনেছে। গত ২৪ মার্চ তারিখে এক দিনেই সারাদেশের সবগুলো বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির প্রায় দেড় লাখ বিদ্যুৎ বিল বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করেছেন গ্রাহক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে বিকাশ গ্রাহকরা এ জরুরি সময়ে যে কোনো ধরনের সমস্যা সমাধানে যেন ‘কাস্টমার সার্ভিস’ সেবা পান এবং লেনদেন অব্যাহত রাখতে পারেন, তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৬২৪৭ নম্বর, বিকাশের ফেসবুক পেজ, লাইভ চ্যাট এবং ইমেইলের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বিকাশের মত বহুল ব্যবহৃত মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনসাধারণকে জানাতে এবং এর প্রতিরোধে সহায়তা করতে উদ্যোগ নিয়েছে এটুআইসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা। এজন্য তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য ও করণীয় বিষয়ে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে বিকাশ অ্যাপের মেনুতে যোগ হলো ‘করোনা ইনফো’।
বিকাশ অ্যাপ ব্যবহারকারীরা এখন বিকাশ অ্যাপের হোমস্ক্রিনের ওপরের মেনুবারে পাচ্ছেন নতুন এ লোগোটি। এ লোগোতে ক্লিক করলেই-সর্বশেষ আপডেট, হটলাইন নম্বর, করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি নির্ণয় করুন, সম্ভাব্য করোনা আক্রান্তের তথ্য দিন এবং স্বেচ্ছাসেবক হোন শিরোনামে সাব-মেনু পাচ্ছেন গ্রাহক। সাব-মেনু থেকে প্রয়োজনীয় মেনুতে ক্লিক করেই সরসারি এটুআই ওয়েবসাইট থেকে সেবা নিশ্চিত করতে পারছেন যে কোনো বিকাশ গ্রাহক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রতিপালনের পাশাপাশি জনস্বার্থে আরো পদক্ষেপ নিয়েছে বিকাশ। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন করোনা পরিস্থিতিতে নানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ এ মুহূর্তে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সহায়তা সহজ করতে বিকাশ অ্যাপের সাজেশন বক্সে সরাসরি যুক্ত হয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের লোগো। এখন দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে খুব সহজেই এ প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিক সহায়তা দিতে পারছেন গ্রাহকরা। একইভাবে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ক্লাব এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান করোনা পরিস্থিতিতে জনসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় আর্থিক সহায়তা বিকাশের মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন।
জনাসমাগম এড়িয়ে চলা, ঘরে থাকাসহ নানা সাবধানতামূলক কাজের মাধ্যমে দেশবাসী করোনা প্রতিরোধে তৎপর। ডিজিটাল লেনদেন তাদের সেইসব পদক্ষেপ আরো সুবিধাজনক এবং সহজ করেছে। গ্রাহকরা জরুরি পরিস্থিতিতে ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধার কারণেই আরো বেশি এ লেনদেনে অভ্যস্ত হচ্ছেন।