করোনাভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীতে মানুষ গৃহবন্দি। মানুষ সংক্রমণের ঝুঁকিতে। তাই হোম কোয়ারেন্টিনে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এরই মধ্যে আবার অনেককেই বাড়ি বসে অফিসের কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। যাকে বলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপের সামনে বসে কর্মক্ষেত্রে পাঠিয়ে দিতে হচ্ছে যাবতীয় আপডেট। আর এখানেই হচ্ছে সমস্যা। লাগাতার ইলেকট্রনিক ডিভাইস চোখের সামনে খুলে রাখলে চোখ জ্বালা করে অনেকেরই। চোখে চাপ পড়ে। চিকিৎসা জানাচ্ছেন, স্ক্রিন থেকে যে নীল আলো বেরিয়ে আসে তা চোখের ক্ষতি করে। ড্রাই আই সমস্যা শুধু চোখেই নয়, শরীরেও খারাপ প্রভাব ফেলে। ফলে কাজ করার ইচ্ছা হারায়।
এখন প্রশ্ন হল, এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়। কারণ দেশজুড়ে লকডাউনের সময়সীমা আরও বেড়েছে। অর্থাৎ এভাবেই বাড়ি বসে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার উপায় নেই। না, দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
ভারতের গুরুগ্রামের একটি রিসার্চ ইনস্টিটিউশনের ডিরেক্টর ডা. অনিতা শেঠী এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার কয়েকটি সহজ উপায় বাতলে দিয়েছেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন পন্থায় কাজও করা যাবে আবার চোখেও চাপ পড়বে না।
১. টানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে না থেকে প্রতি ১৫-২০ মিনিট কিংবা অন্তত এক ঘণ্টা অন্তর বিরতি নিন। এতে চোখ খানিকটা বিশ্রাম পায়। সেই বিরতিতে দূরের জিনিস দেখার চেষ্টা করুন।
২. ল্যাপটপ থেকে বিরতি নেওয়ার মানে কিন্তু এই নয় যে আপনি মোবাইল ঘাঁটতে শুরু করলেন। কিংবা টিভির পর্দায় চোখ রাখলেন। অনেকে আবার মনটা অন্যদিকে ঘোরাতে হাতে তুলে নেন গল্পের বই। তাহলে কিন্তু কোনও লাভ হবে না। ওইটুকু সময় চোখকে বিশ্রাম দিন। প্রয়োজনে চোখ বন্ধ করে গান শুনুন বা গল্প করুন।
৩. চোখ অতিরিক্ত জ্বালা করলে কিংবা চুলকালে অথবা চোখ লাল হয়ে তা থেকে জল পড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তার দেওয়া ওষুধ খান। নিজের থেকে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যাবেন না। লকডাউনের সময় ভিডিও কলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডাক্তার না বললে কোনও আই ড্রপ ব্যবহার করবে না।
৪. চশমা পড়েন। তাহলে অবশ্যই সেটি নিয়মিত পরিষ্কার করুন। ঝাপসা দেখলে কিন্তু আরও সমস্যা। কাজের সময় অকারণে চোখে হাত দেবেন না। এতে কিন্তু করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
৫. দিনের একটা সময় অবশ্যই শরীরচর্চা করুন। এতে শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। চোখও ভাল থাকে।
৬. শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করবেন না। সবচেয়ে ভাল হয় চেয়ার-টেবিলে বসুন। অন্ধকারের সঙ্গে স্ক্রিনের সামনে বসবেন না। ঘরের আলো জ্বালিয়ে নিন। এতে চোখে চাপ কম পড়বে।