বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে তথ্যসংবলিত অ্যাপ ডাউনলোড বেড়েছে। এটাকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে সাইবার অপরাধীরা। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইনে ‘করোনাভাইরাস অ্যাপ’ নামে অসংখ্য ক্ষতিকর অ্যাপ ছেড়েছে সাইবার অপরাধীরা। তাই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। ইসরায়েলভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান চেকপয়েন্ট এমন বেশকিছু ক্ষতিকর অ্যাপ শনাক্ত করার দাবি করেছে। খবর গিজবট।
চেকপয়েন্টের বিশেষজ্ঞদের দাবি, করোনাভাইরাস অ্যাপের ছদ্মবেশে ছাড়া এসব ক্ষতিকর প্রোগ্রাম মূলত অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিয়ন্ত্রণ হাতিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা। তাই এ ধরনের অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে সতর্ক করা হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ৩০ হাজার ১০৩টি ডোমেইন নিবন্ধন হয়েছে। এসব ডোমেইনের মধ্যে ১৩১টি ডোমেইন সরাসরি ক্ষতিকর, ২ হাজার ৭৭৭টি ডোমেইন সন্দেহজনক। গত জানুয়ারি মাস থেকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ডোমেইনের নিবন্ধন ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে অনেকেরই উদ্বেগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকেই নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে অনলাইনে তথ্য খুঁজছেন। বিভিন্ন অ্যাপে এ-সংক্রান্ত তথ্য দেয়ার কথা বলা হয়। একবার যদি আপনার স্মার্টফোনে এসব ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ইনস্টল করে ফেলেন, তবে দূর থেকেই সাইবার অপরাধীরা ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হবে। এতে ব্যবহারকারীর ফোন কল, এসএমএস, ক্যালেন্ডার, ফাইল, কন্টাক্ট, মাইক্রোফোন, ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আপনার অজান্তেই স্মার্টফোনে নানা কাজ করতে পারবে তারা।
গুগল প্লে স্টোরে এ ধরনের ক্ষতিকর অ্যাপ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই কোনো অ্যাপের উৎস নিশ্চিত না হয়ে ডাউনলোড করা ঠিক হবে না। এখন প্লে স্টোরে ক্ষতিকর অ্যাপ রাখা কঠিন হয়ে যাওয়ায় সাইবার অপরাধীরা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিভিন্ন ডোমেইনে অ্যাপ রাখছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে এসব অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য নানা কৌশলে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
চেকপয়েন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে ক্ষতিকর অ্যাপ তৈরিতে বিনা মূল্যের টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়, যাতে হ্যাকিং করা সহজ। যে কেউ সাধারণ কম্পিউটার ও এ ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে ১৫ মিনিটেই ক্ষতিকর অ্যাপ তৈরি করে ফেলতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চেকপয়েন্টের বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে তিনটি অ্যাপের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এগুলো ‘করোনাভাইরাস ডট এপিকে’ এমন নিরীহ নামের অ্যাপ। তবে অনেকে ভুল করে করোনাভাইরাস অ্যাপ মনে করে তা ডাউনলোড করে ফেলতে পারেন। একবার এটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ইনস্টল হয়ে গেলে এর আইকন হারিয়ে যায়। যে কারণে এটি স্মার্টফোন থেকে মুছে ফেলা কঠিন হয়ে যায়। এটি ম্যালওয়্যার কোডযুক্ত সিঅ্যান্ডসি সার্ভারে বারবার যুক্ত হতে থাকে।