কোনো কর্মী করোনাভাইরাস আক্রান্ত কি না তা বুঝতে ওয়্যারহাউজে থার্মাল ক্যামেরার ব্যবহার শুরু করেছে অ্যামাজন। মূলত কারো শরীরে জ্বর আছে কিনা তা বোঝার জন্যই ওই ক্যামেরা বসিয়েছে অনলাইন রিটেইল জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে কপালে থার্মোমিটার ধরে কর্মীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতো অ্যামাজন। কিন্তু কাজটি যথেষ্ট সময়সাধ্য এবং ওই প্রক্রিয়ায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই নতুন প্রক্রিয়া নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। থার্মাল ক্যামেরা সিস্টেম ব্যবহারকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইনটেল ও টাইসন ফুডস। — খবর রয়টার্সের।
অ্যামাজন ওয়্যারহাউজে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কর্মীর সংখ্যা এরই মধ্যে ৫০ ছাড়িয়েছে। কিন্তু ঘরে থাকা মানুষকে জরুরি পণ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত অ্যামাজন নিজেদের ওয়্যারহাউজ বন্ধ রাখতে পারছে না। বর্তমানে থার্মাল ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক নজরে রাখা হচ্ছে কর্মীদের শরীরের তাপমাত্রা। কোন পরিস্থিতিতে কোনো কর্মীর শরীরে কতটুকু তাপমাত্রা স্বাভাবিক- সে হিসেবের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হচ্ছে থার্মাল ক্যামেরার মাধ্যমে প্রাপ্ত তাপমাত্রা। কোনো কর্মীর তাপমাত্রা সন্দেহজনক মনে হলে, সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা পেতে পুনরায় থার্মোমিটারের মাধ্যমে সে কর্মীকে পরীক্ষা করে দেখছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে থার্মাল ক্যামেরার ব্যবহার প্রথমবার বিশ্ব দেখেছিল ২০০৩ সালে। সে সময় সার্স ভাইরাস রোধে এশিয়ার এয়ারপোর্টগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছিল থার্মাল ক্যামেরা। এ ধরনের ক্যামেরার মূল্য সাধারণত পাঁচ থেকে ২০ হাজার ডলারের মধ্যে হয়ে থাকে।
সামাজিক মাধ্যমে এক অ্যামাজন কর্মী জানিয়েছেন, আগের সপ্তাহ এবং এই সপ্তাহের মধ্যে কম করে হলেও ছয়টি ওয়্যারহাউজে থার্মাল ক্যামেরা বসিয়েছে অ্যামাজন। এদিকে, অ্যামাজনের এক কর্মচারীর নোটের বরাতে জানা গেছে, প্রবেশ পথেও থার্মোমিটারের পরিবর্তে থার্মাল ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হয়েছে।
এক বিবৃতিতে অ্যামাজন বলেছে, “যারা আমাদের কমিউনিটিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিচ্ছেন, আমাদের সেসব কর্মীর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সমর্থনে” প্রতিষ্ঠানটি তাপমাত্রা পরীক্ষা করছে।
তবে, অ্যামাজনের এটি নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন এক কর্মী। হিউস্টনের এক ওয়্যারহাউজে তাপমাত্রা পরীক্ষা করেন এমন এক কর্মী জানিয়েছেন তাকে তাপমাত্রা পরীক্ষার কাজে অন্যান্যদের বেশ কাছে যেতে হয়, বিষয়টি তার জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে। “এই ঝুঁকি নেওয়ার জন্য তো আমি কাজে আসিনি” – বলেছেন ওই কর্মী।
কোন প্রতিষ্ঠানের গ্যাজেট ব্যবহার করা হচ্ছে, সে বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলেনি অ্যামাজন। তবে, প্রতিষ্ঠানটির সিয়াটলের বাইরে অবস্থিত এক ওয়্যারহাউজ কর্মী জানিয়েছেন, টেক্সাসের ‘ইনফ্রারেড ক্যামেরাস ইনকর্পোরেটেড’ (আইসিআই) প্রতিষ্ঠানের ক্যামেরা ব্যবহার করছে অ্যামাজন। বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছিল আইসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী গ্যারি স্ট্রাহান-এর কাছে, অ্যামাজনের সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটাই তিনি করবেন না বলে জানিয়েছে স্ট্রাহান।