তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া বিজয়ী দলগুলোকে অভিনন্দন জানিয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন উদ্ভাবনীর দ্বারা সমস্যাকে সুযোগে পরিণত করার আহবান জানান।
প্রতিমন্ত্রী আজ ডিজিটাল প্লাটফর্মে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ২০২০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আরও বলেন, উদ্ভাবনী এবং সৃজণশীল চিন্তা থেকে যে কোন সমস্যাকে সুযোগে পরিণত করতে পারে দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা। তাদের উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল চিন্তার সাথে ব্লকচেইনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করা হলে দেশ অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রয়োজন থেকেই নতুন নতুন উদ্ভাবনের জন্ম হয়। করোনাকালে আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছি ঠিকই কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্ভাবনের দ্বারা ভার্চুয়াল জগতে আমরা একে অপরের কাছাকাছি আছি।
অনুষ্ঠানে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক হাবিবুলারঅহ এন করিম দেশে প্রথবারের মতো অনুষ্ঠিত ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারিদের মধ্য থেকে ১০টি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ী দলগুলোকে পুরস্কারের অর্থের ভার্চুয়াল চেক প্রদান করা হয়। আর চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ডটি প্রদান করা হয় সদ্য প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নামে যিনি ব্লকচেইন অলিম্পয়াড বাংলাদেশের একজন উপদেষ্টা ছিলেন।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী চ্যাম্পিয়ন দলের প্রধান অনিরুদ্ধ’কে তার নগদ অ্যাকাউন্টে পুরষ্কারের এক লক্ষ টাকা ট্রানসফার করেন। বিজয়ীদের হংকং ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের স্পনসর করা হবে বলে জানানো হয়।
হাবিবুল্লাহ বলেন, একটি জুরি বোর্ডের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারি ৬২টি দলের জমাকৃত ৬২টি প্রকল্পের মূল্যায়ন করে ১০ দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ী দলগুলো হচ্ছে: হাইপারঅ্যাকটিভ অরেঞ্জেস, টীম লীড চেইন, ডিইউ নিমবাস, টীম ডিজিটাল ইনোভেশন, টর, ওয়েব থ্রি ডট ওয়ান, ব্রোগ্রামারস, এভিয়াটো, ডিইউ হাইপালেজার, কসমিক ক্রিউ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৫৭ জন বিচারক নিয়ে গঠিত বোর্ড গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বøকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারিদের জমাকৃত ৬২টি প্রকল্পের মূল্যায়ন করে এ ১০টি দলকে বিজয়ী দল হিসেবে নির্বাচন করে।
অনলাইন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর স্মরণে একটি ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, বøকচেইর অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ এর আহবায়ক ও বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ ও সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ এন করিম, বেসিসের প্রেসিডেন্ট আলমাস কবির, এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মো, হংকং বøকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা, এমআইটি’র প্রফেসর এ্যালান এল্ডারম্যান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, রেজাউল করিম বক্তব্য রাখেন।
এর আগে জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, অধ্যাপক জাফর ইকবাল, অধ্যাপক কায়কোবাদ, অধ্যাপক সৈয়দ ড. ফরহাত আনোয়ার, আইসিটি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, কম্পোট্রালার এন্ড অডিটর জেনারেল মুসলিম চৌধুরী, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।
পলক বলেন, জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। তাঁর মত সৎ, দেশপ্রেমিক, নিরঅহঙকারি মানুষ কমই দেখা যায়। তাঁর অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ আমাদের স্বপ্ন দেখাতো। তাঁর রেখে যাওয়া দর্শণকে ধারণ ও কর্মকে অনুসরণ করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ এর উদ্যোগে বøকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরির লক্ষ্যে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানে অর্গনাইজিং পার্টনার হিসেবে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের এলআইসিটি প্রকল্প, ইন্টারন্যাশনাল ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড, টেকনোহ্যাভেন কোম্পানী লি. এবং পার্টনার হিসেবে এফবিসিসিআই, বেসিস এবং আইবএ। প্রতি বছরই দেশের শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়কে ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলার জন্য ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হবে।