চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) সেমিকন্ডাক্টর জায়ান্ট কোয়ালকমের রাজস্ব ৫ শতাংশ বেড়ে ৫২২ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির চিপের গড় বিক্রি মূল্য ছিল ৩১ দশমিক ৮ ডলার, যা এক প্রান্তিক আগের চেয়ে অনেকটা বেশি। গত বছর অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে এর চিপের গড় বিক্রি মূল্য ছিল ২৩ ডলার। বিশ্বজুড়ে হাই-এন্ড চিপের চাহিদা বৃদ্ধির সুবাদে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের আর্থিক খতিয়ানে এমন তথ্যই জানিয়েছে কোয়ালকম। খবর টেলিকম লিড।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে ফাইভজি স্মার্টফোন সরবরাহ কয়েক গুণ বেড়ে ২ কোটি ৪১ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে। অথচ গত বছরজুড়েই বৈশ্বিক বাজারে ফাইভজি স্মার্টফোন সরবরাহের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮৭ লাখ ইউনিট। পঞ্চম প্রজন্মের দ্রুতগতির মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোনের অন্যতম চিপ সরবরাহকারী কোয়ালকম। ফাইভজি ফোনের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানটির চিপের চাহিদা বেড়েছে, যা রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে। স্যামসাংসহ এলজি ইলেকট্রনিকস ও অ্যাপলের হাই-এন্ড ডিভাইসের অন্যতম চিপ সরবরাহকারী কোয়ালকম। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সিং ব্যবসা বিভাগের রাজস্ব ১০৭ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোয়ালকম এরই মধ্যে ৮৫টির বেশি ফাইভজি লাইসেন্স চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এসব চুক্তির আওতায় ৪৫টির বেশি ভেন্ডর ফাইভজি ডিভাইস উন্মোচন করেছে এবং কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি ডিভাইস উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কভিড-১৯ মহামারীর মধ্যেও জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনে ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোনের চাহিদা বেড়েছে। ফাইভজি স্মার্টফোনের চাহিদার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে চীন। অবশ্য এখন দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোনের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, বিশ্বের বৃহৎ ও দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতা যথাক্রমে স্যামসাং ও হুয়াওয়ে এখন স্মার্টফোনে নিজস্ব প্রসেসর চিপসেট ব্যবহারে জোর দিচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষ দুই ডিভাইস নির্মাতার এমন উদ্যোগে চিপসেট ব্যবসায় বাজার হারাচ্ছে কোয়ালকম।
আরেক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএইচএস মার্কিটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্যামসাং ও হুয়াওয়ে বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহকৃত ডিভাইসের ৩০ শতাংশে নিজস্ব প্রসেসর চিপসেট ব্যবহার করছে। পাশাপাশি উভয় প্রতিষ্ঠানই ডিভাইসে নিজস্ব চিপ ব্যবহার ক্রমে বাড়াতে কাজ করছে। স্যামসাং ও হুয়াওয়ের এমন উদ্যোগের কারণে তৃতীয় পক্ষের ক্রেতাদের কাছে কোয়ালকমের প্রসেসর চিপসেট সরবরাহ কমছে। তবে প্রসেসর চিপ সরবরাহ কমলেও ফাইভজি মডেম চিপ সরবরাহে ভালো করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে আইএইচএস মার্কিটের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক জেরিট স্নিমান বলেন, টানা কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজার খারাপ সময় পার করছে।