জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কালো তালিকাভুক্ত করার পর ৫জি নিয়ে নতুন করে হুয়াওয়ের সঙ্গে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের সুযোগ করে দিতে খসড়া নীতিমালা স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, নতুন নীতিমালার আওতায় হুয়াওয়ের সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের ৫জি নেটওয়ার্কের মান নির্ধারণে কাজ করতে পারবে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত বছর মে মাসে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কালো তালিকাভুক্ত করার পর ৫জি’র মান নির্ধারণে হুয়াওয়ের সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলো কিছু মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা।
টেলিযোগাযোগ খাতের কর্মকর্তা এবং সরকারি কর্মকর্তারা মনে করেন এই পদক্ষেপের কারণে কিছুটা পিছিয়েই পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রকৌশলীরা নীরবে বের হয়ে আসায় মান নির্ধারণের সভাগুলোতে বলিষ্ঠ অবস্থান পেয়েছে হুয়াওয়ে। এ ধরনের সভাগুলোতে সাধারণত প্রোটোকল এবং প্রযুক্তিগত স্পেসিফিকেশন ঠিক করা হয়, যাতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বানানো যন্ত্রাংশগুলো নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কালো তালিকায় হুয়াওয়ের নাম ওঠার পর প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ব্যবসায় সীমাবদ্ধতা আসে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসা করতে বিশেষ লাইসেন্স নেওয়ারও বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে প্রশ্ন ওঠে মান নির্ধারণের সভাগুলোতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়া নিয়ে, যেখানে হুয়াওয়েও সদস্য।
প্রায় এক বছর পর এই সমস্যা সমাধানে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খসড়া নীতিমালা করেছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে দুই সূত্র। এই নীতিমালার কারণে সদস্য হিসেবে হুয়াওয়ে থাকলেও সেই সভায় অংশ নিতে পারবে কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠান।
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, খসড়া নীতিমালা এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত পর্যালোচনায় রয়েছে। এরপরই এটি খতিয়ে দেখবে অন্যান্য সংস্থা। কবে নাগাদ সব প্রক্রিয়া শেষ হবে তা এখনও অস্পষ্টই থেকে যাচ্ছে।
ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি কাউন্সিলের এশিয়া অঞ্চলের জেষ্ঠ্য নীতিমালা পরিচালক নাওমি উইলসন বলেন, “আমরা যখন বছরের এই সময়টার দিকে এগোচ্ছি, এই বিষয়টি আমলে নেওয়ার এবং স্পষ্ট করার এটিই সময়।” এই কাউন্সিল অ্যামাজন, কোয়ালকম এবং ইনটেলসহ অন্যান্য আরও অনেকেরই প্রতিনিধিত্ব করে।
উইলসন আরও বলেন, হুয়াওয়ের সঙ্গে এখনও মার্কিন প্রতিষ্ঠানের প্রতিদ্বন্দ্বীতা চায় যুক্তরাষ্ট্র। “কিন্তু নীতিমালার কারণে অসাবধানতাবশত তারা হুয়াওয়ে এবং তালিকার অন্যান্যদের কাছে নিজেদের আসন হারিয়েছে।”
ধারণা করা হচ্ছে, টেলিযোগাযোগ খাতে দ্রুতগতির ভিডিও ট্রান্সমিশন থেকে শুরু করে স্বচালিত গাড়ি সব ক্ষেত্রেই মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে এই ৫জি নেটওয়ার্ক।
টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এই খাতের মানগুলোও বড় ব্যবসা। মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারলে নিজেদের পেটেন্ট করা এমন প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শত শত কোটি মার্কিন ডলারের ব্যবসা করে নিতে পারে।