সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ গত ১৮ মার্চ থেকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউনে ঘরবন্দি দেশের প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ শিশু-কিশোর (প্লে থেকে দশম শ্রেণি)। তারা এখন অনলাইনে ক্লাস করছে। তাই চার থেকে ১৪ বছরের শিশু-কিশোররা বাধ্য হয়েই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এজন্য ইন্টারনেট ঝুঁকিতে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিশু-কিশোর বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
শুক্রবার (৮ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘরে আটকে রাখলেও আমরা যে ইন্টারনেট কোমলমতি শিশু-কিশোরদের হাতে তুলে দিচ্ছি তা কি আদৌ নিরাপদ? এখনও এই মাধ্যম শিশু-কিশোরদের জন্য ব্যবহার উপযোগী হয়নি। এ কারণে গত ৬ মে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) খুব কম বয়সের শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছে। তারা বলেছে, বিশ্বের প্রায় ১৫০ কোটি স্কুল-কলেজ বন্ধ। এরা লেখাপড়া, খেলাধুলা, ভিডিও গেমস দেখতে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এতে তারা সাইবার ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে।
মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বাংলাদেশে ইন্টারনেট ও ডিভাইস স্বল্পতার কারণে যদি ৫০ শতাংশ ইন্টারনেটের বাইরেও থাকে তারপরও প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর ইন্টারনেটের অশুভ প্রভাব তাদের ওপর পড়বে। সেই সঙ্গে অতিমাত্রায় ব্যবহারের ইন্টারনেট আসক্তির বিষয়টিও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
তারা আরও বলেছে, শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরাপত্তার বিষয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে আমাদের জানা নেই এবং এ নিয়ে কোনো নীতিমালাও তৈরি হয়নি। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) কিছু সুপারিশমালা তৈরি করতে যাচ্ছে। ইন্টারনেটের যে বিষয়ে আমরা জানতে চাই তার পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলোও চলে আসবে। ফলে কোমলমতি শিশুরা যা জানার কথা প্রাপ্ত বয়সে তা জেনে যাচ্ছে মেধা বিকাশের পূর্বেই। সেই সঙ্গে তারা নিজেকে এবং তার পরিবারকে সাইবার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ করেছে সংগঠনটি। পাশাপাশি সরকারকে দ্রুত ইন্টারনেটের নিরাপত্তার বিষয়টি জোরালোভাবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।