কোভিড-১৯ বা নভেল করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবেলায় দেশের তরুণদের অংশগ্রহণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে এবং কল ফর নেশন প্লাটফর্মের আওতায় অনুষ্ঠিত হলো কোভিড-১৯ এ্যাক্ট অনলাইন হ্যাকাথন। দেশের তরুণ বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক, সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের জমা দেয়া ৬৮১টি প্রকল্প থেকে ন্যাশনাল জুরিদের সাহায্যে যাচাই বাছাই শেষে, ৮ জুন বিকাল চারটায় সিজন-১ এর গ্রান্ড ফিনাল অনুষ্ঠানে ৬টি ক্যাটাগরিতে ৬টি প্রকল্পকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও ৬টি ক্যাটাগরিতে ২টি করে রানার্সআপ পুরষ্কার, ২টি বিশেষ ক্যাটাগরিতে ২টি পুরষ্কার ও ১৬টি অনারেবল মেনশনসহ সর্বমোট ৩৬টি পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি অনলাইনে পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সভাপতিত্ব করেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম ।
১৮ জন ন্যাশনাল জুরির সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলের মাধ্যমে ৬টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ও রানার্স আপ প্রকল্পগুলো যথাক্রমে:
স্যোসিও ইকোনোমিক্যালি ডিজএ্যাডভানটেজ পিপল
এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী আই সোশ্যাল এর ‘সুযোগ-এ ভার্চুয়াল অপারেশনাল নেটওয়ার্ক টু সাপোর্ট দ্যা বিওপি পপুলেশন’ নামের প্রকল্প। এর টিম লিডার ছিলেন অনুপমা ইসলাম নিশো। প্রথম রানার্স আপ হয় চালান.এক্সওয়াইজেড এর ‘মানুষ.এআই’ নামের একটি প্রকল্প যার টিম লিডার ছিলেন আবির রহমান। দ্বিতীয় রানার্স আপ হন ভার্টিকাল ইনোভেশনস লি. এর মো. মনিরুল ইসলাম। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘আইওটি এ্যানাবলড অটো সলিউশন ফর ওএমএস ডিসট্রিবিউশন’।
বিজনেস অপারেশন এন্ড প্রোডাকশন
এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ল্যান্ডনক লি. এর ‘ল্যান্ডনক: লাস্ট মাইল গ্রোসারি ম্যানেজমেন্ট এ্যাপ ফর দ্যা পিপল হু ক্যান্ট ইনভেস্ট লার্জলি অন টেক।’ এই প্রকল্পটির টিম লিডার ছিলেন মাহির আমিরুর রহমান ইরাম। প্রথম রানার্স আপ হয় লন্ডন স্কুল অব কমার্স এর আদনান খানের ‘নিউ থ্রেড’ নামের একটি প্রকল্প। দ্বিতীয় রানার্স আপ হন ইনাম বাংলাদেশ প্রাইভেট লি. এর জোবাইদা সুলতানা চৌধুরী। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘নেক্সট জেনারেশন স্মল বিজনেস প্লাটফর্ম।’
হেলথ কেয়ার ইকুয়পমেন্ট এন্ড ট্রিটমেন্ট
এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে থিংক ব্রিকস এর ‘পাওয়ারড এয়ার পিউরিফায়িং রেস্পিরেটর (পিএপিআর)।’ প্রকল্পটির টিম লিডার ছিলেন শিমুল হুদা। প্রথম রানার্স আপ হয় বুয়েট এর আসিফ শাহরিয়ার সুস্মিত এর ‘র্যাডএ্যাসিস্ট: দ্যা ফাস্ট এআই বেইজড টেলিরেডিওলজি সলিউশন ডেভলপড ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি প্রকল্প। দ্বিতীয় রানার্স আপ হন ইজেনারেশন লি. এর মুহাম্মাদ সুমন খান। তাঁর প্রকল্পের নাম ছিল সেন্ট্রাল আইসিইউ ম্যনেজমেন্ট এন্ড মনিটরিং সিস্টেম।
এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন
এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ইনোভেস টেকনোলজিস এর ‘নিরাপদ: স্টে হোম, স্টে সেফ, হেল্প বাংলাদেশ পুলিশ অর এনি কনসার্নড অথরিটি টু মনিটর অল দ্যা পিপল হু আর ইন হোম কেয়ারাইনটাইন’ নামের প্রকল্প। এর টিম লিডার ছিলেন মোহাম্মাদ মুনিরুল আলম। প্রথম রানার্স আপ টগুমগু প্রাইভেট লি. এর ‘ওয়ান স্টপ প্যারেন্টিং এ্যাপ বাই টগুমগু’। এর টিম লিডার ছিলেন মো: জিল্লুল করিম। দ্বিতীয় রানার্স আপ হন পিফিজার এর মো: অনিক আলম। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘কোভিড-১৯ ডেটা এ্যানালিসিস টু ডিটারমাইন ক্রিটিকাল হেলথ, হাইজিন এন্ড ইনফরমেশন এ্যাকসেস ফ্যাক্টর টু এ্যাসেস রিস্ক এন্ড ডেভালপ মিটিগেশন এন্ড প্রিভেনশন স্ট্রাটেজি ইন বাংলাদেশ।’
মেন্টাল হেলথ
এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ‘মনের বন্ধু’। প্রকল্পটির টিম লিডার ছিলেন তওহীদা শিরোপা। প্রথম রানার্স আপ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুমাইয়া আজমি। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘নির্ভানা: মেন্টাল হেলথ এন্ড ওয়েল বিয়িং সাপোর্টস’ এবং দ্বিতীয় রানার্সআপ হয় নর্থসেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ এর জেসমিন আক্তার। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘মনোসেবা: এ্যান অনলাইন সাইকলজিক্যাল সলিউশন’।
আদারস
এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী এএনটিটি রোবোটিক্স লি. এর ‘লং ডিসটেন্স ডিজইনফেকশান প্রসিডিউর/সার্ভিস ফর লকড ডাউন এরিয়াস’ নামের একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির টিম লিডার ছিলেন সৈয়দ গোলাম ইয়ামুর আবদুল্লাহ। প্রথম রানার্স আপ হয় ওয়াটসিটিজ এর ‘আলট্রাভায়োলেট জার্মিসাইডাল ইরাডিয়েশান বেইজড ডিজইনফেকশন বক্স’ নামের একটি প্রকল্প যার টিম লিডার ছিলেন মুশফিকুর রহমান। দ্বিতীয় রানার্স আপ হন ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনালোজি এন্ড সাইন্স এর কে.এম সাদিকুর রহমান। তাঁর প্রকল্পের নাম ছিল মানবতার ঘর।
ওয়াটার এইড বাংলাদেশ এর ‘কানেক্টিং দ্যা আনকানেকটেড স্লাম ডুয়েলারর্স’ এর জন্য হাসিন জাহান এবং প্রাভা হেলথ এর সিলভানা কিউ সিনহা তাঁর ‘প্ৰান্ন: কোভিড+ পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট টুল’ এর জন্য বিশেষ পুরষ্কার লাভ করেন। এর বাইরে ১৬ টি প্রকল্পকে অনারেবল মেনশন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এই সকল সলিউশনগুলোর সুবিধা যাতে দেশের মানুষ গ্রহণ করতে পারেন, সে কারণে এই গুলোকে স্টার্টআপে পরিণত করা হবে। এজন্য স্টার্টআপ ফান্ড ও মেন্টরিংসহ সরকারের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
গত ৩০ মার্চে শুরু হওয়া এই অনলাইন হ্যাকাথনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সাথে সহযোগী পার্টনার ছিলেন যথাক্রমে: আইডিয়া, স্টার্টআপ বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ডসামিট এ্যাওয়ার্ড, ঢাকা লাইভ, এ্যাঙ্করলেস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এ্যাঞ্জেলস, স্টার্টাপ এ্যাকসিলেটর, বেটার স্টোরিজ, জিপি এ্যাকসিলেটর, লাইটক্যাসেল, আর ভেঞ্চার, স্টার্টআপ ঢাকা, স্ট্যার্টআপ চট্টগ্রাম, ইয়ুথ কো:ল্যাব, ওয়াইগ্যাপ, ইউএনসিডিএফ, ইউল্যাব, ডিজিটাল খিচুরি, টার্টেল ভেঞ্চার, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল পার্টনার এসোসিয়েশন বাংলাদেশ।