যুক্তরাজ্যে নিজেদের ব্যবসা বাঁচাতে মাঠে নেমেছে হুয়াওয়ে। দেশটিতে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। চীনা এ টেক জায়ান্ট নিজেদের যুক্তরাজ্য প্রচারণার নাম দিয়েছে ‘দ্য কমিটমেন্ট’।
প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, দেশের ৫জি নেটওয়ার্ক তৈরিতে যে হুয়াওয়ের উপর ভরসা রাখা যায় – সে বিষয়টিই মূলত নিজেদের প্রচারণা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও জনসাধারণকে বুঝাতে চাইছে হুয়াওয়ে।
কিছৃুদিন পরেই যুক্তরাজ্যে নিরাপত্তা পর্যালোচনার মুখোমুখি হতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। ওই পর্যালোচনার পর যুক্তরাজ্যে হুয়াওয়ের কর্মকাণ্ডে বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। কিন্তু তেমনটা হতে দিতে রাজি নয় চীনা এই প্রযুক্তি জায়ান্ট।
আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে পূর্ণ পৃষ্ঠা বিজ্ঞাপনের পরিকল্পনা করেছে হুয়াওয়ে। নিজেদের বিজ্ঞাপনকে ‘খোলা চিঠি’ কাঠামোতে যুক্তরাজ্যের জনগণের সামনে পেশ করবে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাজ্যে গত দুই দশক ধরে ব্যবসা করার সময় তাদের অবদান জানানোর জন্য এই বিজ্ঞাপন ব্যবহার করবে তারা।
ওই খোলা চিঠিতে লেখা রয়েছে, “আমরা কাজের সুযোগ তৈরিতে, আগামীর প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষিত করতে, নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সমর্থনে ভূমিকা রেখেছি”।
হুয়াওয়ের ব্যাপারে মার্কিন আপত্তি আমলে নেননি যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রিটেনের ৫জি নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের ৩৫ শতাংশ মূলধন সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জনসনের দলেরই বেশ কয়েক জন জনপ্রতিনিধি হুয়াওয়ের ব্যাপারটি সহজভাবে নিতে পারছেন না, নিষিদ্ধ করতে চাইছেন প্রতিষ্ঠানটিকে। সেই পক্রিয়ারই অংশ হচ্ছে আসন্ন নিরাপত্তা পর্যালোচনা।
হুয়াওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিকটর ঝ্যাং জানিয়েছেন, ব্রিটেনে গত ২০ বছর ধরে ব্যবসা করছে হুয়াওয়ে, এই সময়ের মধ্যে ৩জি এবং ৪জি মোবাইল নেটওয়ার্ক তৈরিতে যুক্তরাজ্যকে সহায়তা করেছে তারা। দেশটির সংযুক্ততার জন্য যা যা প্রয়োজন সেসব তৈরিও অব্যাহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
“ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যার শতভাগ মালিকানাই কর্মীদের মধ্যে বণ্টিত, আমাদের সবসময়ের অগ্রাধিকার ছিল আরও ভালোভাবে যুক্তরাজ্যকে সংযুক্ত করতে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করা।” – সোমবার বলেছেন হুয়াওয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট।
তিনি আরও যোগ করেন, “ব্রিটেনের প্রয়োজন সবচেয়ে ভালো সম্ভাব্য প্রযুক্তি, আরও বাছাইয়ের সুযোগ, উদ্ভাবন এবং আরও সরবরাহকারী। এগুলোর সব কিছুর অর্থ দাঁড়াচ্ছে আরও নিরাপদ এবং আরও প্রাণবন্ত নেটওয়ার্ক”।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে হুয়াওয়েকে দেওয়া ছাড়ের ব্যাপারে আরও কঠোর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যন্ত্রাংশের জন্য হুয়াওয়ের মাইক্রোচিপ তৈরির সক্ষমতাকে সীমিত করে দিচ্ছে দেশটি।