বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি এক অনলাইন সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের এশিয়া প্যাসিফিক পার্টনার অ্যাসেন্ড প্রোগ্রাম চালু করেছে। এ প্রোগ্রামের লক্ষ্য হচ্ছে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলকে আরও ডিজিটাল ও ইন্টেলিজেন্ট করতে একটি উদ্ভাবনী ও টেকসই এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ইকোসিস্টেম তৈরি করা।
হুয়াওয়ে আয়োজিত ‘অ্যাসেন্ড টু পারভেসিভ ইন্টেলিজেন্স’ প্রতিপাদ্যের এ অনলাইন সম্মেলনে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ, এ খাতের বিশেষজ্ঞগণ এবং অ্যাকাডেমিক স্কলার অংশ নিয়ে এআই নিয়ে তাদের সাফল্যের গল্প এবং এ খাত সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরেন।
সামিটে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়া এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাসেন্ড প্রোগ্রামটি তিনটি সাব-প্রোগ্রাম নিয়ে গঠিত। সাব-প্রোগ্রামগুলো হলো: ইন্ডিপেন্ডেন্ট সফটওয়্যার ভেন্ডর এআই কোলাবোরেশন, ইনস্টিটিউট অব হায়ার লার্নিং (আইএইচএল) এআই ট্যালেন্ট কালটিভেশন এবং গভর্মেন্ট এআই ইন্ডাস্ট্রি ডেভলপমেন্ট।
এই প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে হুয়াওয়ে ও এর অংশীদাররা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করবে যার মধ্যে রয়েছে: এআই’র উন্নয়ন, বাজার অভিজ্ঞতা, গ্রাহক সুবিধাদানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বহির্ভাগের কর্মীদের সঠিকভাবে ব্যবহার করে কীভাবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারের সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা যায় প্রভৃতি।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট সফটওয়্যার ভেন্ডর এআই কোলাবোরেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইন্ডিপেন্ডেন্ট সফটওয়্যার ভেন্ডর (আইএসভি), উদ্ভাবক এবং উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী নানা সুবিধা প্রদান করবে, যার মধ্যে রয়েছে: নন-রিকারিং ইঞ্জিনিয়ারিং ফান্ডিং (এনআরইএস), ক্লাউড রিসোর্স ভাউচার, অ্যাসেন্ড কমিউনিটির মাধ্যমে জ্ঞানের বিনিময়, হুয়াওয়ে এইচসিআইএ-এআই সার্টিফিকেশন এক্সাম-ভাউচার এবং গো-টু-মার্কেট নিয়ে সহায়তা। ইনস্টিটিউট অব হায়ার লার্নিং (আইএইচএল) এআই ট্য্যালেন্ট কালটিভেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে হুয়াওয়ে ফুল-স্ট্যাক অ্যাটলাস প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এআই ডিসিপ্লিন খুলতে, এইআই নিয়ে আগ্রহীদের জ্ঞানের বিকাশে এবং এইআই নিয়ে অ্যাকাডেমিক গবেষণার উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করা হবে।
এ নিয়ে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের বিজনেস অ্যানালিটিক্স সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর হুয়াং ঝিইয়ং বলেন, ‘এআই’র এ যুগে, গবেষণা ও প্রতিভা বিকাশে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর ও হুয়াওয়ের মধ্যকার কৌশলগত অংশীদারিত্ব সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
এ প্রোগ্রামটি এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোতে অ্যাসেন্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করে এআই উদ্ভাবন সক্ষমতা বাড়াতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কারিগরি সহায়তাদান করবে। এছাড়াও, হুয়াওয়ে এ খাতের সর্বোত্তম অনুশীলনীগুলো নিয়েও তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবে এবং এআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের মতো নীতি সংক্রান্ত বিষয়েও সহযোগিতা করবে।
‘বিপিপিটি কর্তৃক প্রণীত ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় এআই কৌশল দেশের ‘গোল্ডেন ভিশন ২০৪৫’ অর্জনের পথে ইন্দোনেশিয়ার উদ্ভাবনমুখী দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এক্ষেত্রে, এইআই অপরিহার্য। এআই’র সর্বত্র উপস্থিতি আমাদের দেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে,’ বলেন এজেন্সি ফর দ্য অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন অব টেকনোলজির (বিপিপিটি) প্রধান ড. আইআর. হাম্মাম রিযা, এম.এসসি.।
এ প্রোগ্রাম ও ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলো অভুতপূর্ব ব্যবসায়িক সুযোগ উপভোগ করবে। অঞ্চলগুলোতে এআই’র বিকাশ, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এবং বিভিন্ন দেশসমূহের সহায়ক নীতি এআই কম্পিউটিংয়ের জন্য বাজার বিকাশের সুযোগ তৈরি করেছে।
এ বিষয়ে হুয়াওয়ে ক্লাউড অ্যান্ড এআই বিজনেস গ্রুপের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ঝৌ বলেন, ‘এআই ইকোসিস্টেম-ভিত্তিক সহযোগিতার প্রসঙ্গে হুয়াওয়ে সবসময় অবকাঠামোগত বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করে। আমরা এআই’র বিকাশকে বেগবান করতে অ্যাকাডেমিশিয়ান এবং এ খাত সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কাজ করছি, যা সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তি এবং এ খাতকে এগিয়ে নেবে। সর্বোপরি, আমাদের প্রত্যাশা ডিজিটাল অসাম্য দূর করা এবং শীঘ্রই যূথবদ্ধভাবে সাফল্য অর্জন। আমাদের সমন্বিত ‘কানেক্টিভিটি + কম্পিউটিং+ ক্লাউড সিনার্জি’ ব্যবহার করে আমরা আমাদের অংশীদারদের কনটেন্ট, অ্যাপ্লিকেশন ও অ্যালগরিদমের জন্য বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন, স্বয়ংক্রিয়, তথ্যভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম সহায়তা দিতে পারবো। আমরা সবাই মিলে একটি প্রবৃদ্ধিশীল ইকোসিস্টেম নির্মাণ করে পুরোপুরি কানেক্টেড ও ইন্টেলিজেন্ট বিশ্বের সূচনা করবো।’