ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ‘অ্যানড্রয়েড ১১’-এর বেটা সংস্করণ। পরীক্ষামূলক সেই সংস্করণের বেশ কয়েকটি আপডেটও এসেছে। এসব দেখে বলা যায়, অ্যানড্রয়েডের এবারের সংস্করণে বেশ কিছু বড় পরিবর্তন আসছে।
স্ক্রিন রেকর্ডার
অ্যানড্রয়েড ব্যবহারকারীদের দীর্ঘদিনের চাওয়া শেষ পর্যন্ত পূরণ করতে যাচ্ছে গুগল। স্ক্রিনে কী হচ্ছে ভিডিও হিসেবে ধারণ করার ফিচার সরাসরি অ্যানড্রয়েড সিস্টেমে না থাকায় সেটি ফোন নির্মাতারা নিজেদের কাস্টম ফিচার হিসেবে যুক্ত করে আসছিলেন; এমনকি প্রচুর অ্যাপও তৈরি হয়েছিল কাজটি করার জন্য। ফোনের বিল্ট-ইন ফিচার হিসেবেই এখন থেকে এটি পাওয়া যাবে। স্ক্রিন রেকর্ড করার জন্য প্রয়োজন হবে না শক্তিশালী কোনো প্রসেসরেরও। এত দিন পর্যন্ত যেসব অ্যাপের মাধ্যমে কাজটি করা যেত সেগুলো চালানোর জন্য প্রয়োজন হতো বেশ শক্তিশালী প্রসেসর ও র্যাম, তার পরও মনমতো হতো না ভিডিওর মান। এবারের আপডেটে সে সমস্যাও সমাধানের চেষ্টা করছে গুগল।
টাচ সেনসিটিভিটি পরিবর্তন
অনেক সময় ফোন ব্যবহার করতে হয় ভেজা হাতে বা গ্লাভস পরা অবস্থায়, বিশেষ করে ‘কভিড-১৯’-এর প্রভাবে গ্লাভসের ব্যবহার বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সে চিন্তা থেকেই গুগল ফোনের টাচস্ক্রিন কতটুকু স্পর্শ করলে শনাক্ত করবে, সেটা ব্যবহারকারীরাই ঠিক করে দিতে পারবেন। ফিচারটি একসময় সনি এক্সপেরিয়া সিরিজের ফোনে দেওয়া হয়েছিল। চাইলে ফোনের টাচ সেনসিটিভিটি বাড়িয়ে ভারী গ্লাভস বা সরাসরি টাচ না করেই ফোন ব্যবহার করা যাবে, আবার চাইলে সেটা কমিয়ে ভেজা হাত ব্যবহারেরও সুবিধা সংযোগ করা যাবে।
নোটিফিকেশনে নতুনত্ব
একবার নোটিফিকেশন সরিয়ে দিলে ফিরে পাওয়ার কোনো সরাসরি উপায় এত দিন অ্যানড্রয়েডে ছিল না। অথচ অনেকেই অবাক হবেন নোটিফিকশেন হিস্ট্রি ফোনে সব সময়ই জমা থাকে, দেখার জন্য লাগে বিশেষ অ্যাপ। সে সমস্যার সমাধান আসছে, সরাসরি নোটিফিকেশন হিস্টোরি আইকনে টাচ করেই সেগুলো সব দেখা যাবে। নোটিফিকেশন গোছানোর দিকে আরো নজর দিয়েছে গুগল, এবার যেসব নোটিফিকেশন চাইলেও সরানো যায় না, সেগুলোও দূর করার ব্যবস্থা রাখবে তারা। সরাসরি নোটিফিকেশন থেকেই মিউজিক প্লেয়ার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে আরো সহজে, কুইক টগলেই পাওয়া যাবে প্লে আর পজ বাটন।
নিরাপত্তা জোরদার
নতুন অ্যাপ চালু করলেই একগাদা পারমিশন চাওয়া খুবই স্বাভাবিক। সমস্যার শুরু তখনই, যখন অ্যাপ নির্মাতারা পরবর্তী আপডেটে সে পারমিশনগুলোর অপব্যবহার শুরু করে। বিশেষ করে ক্যামেরা, ফোন, স্টোরেজ আর লোকেশন পারমিশনের অপব্যবহার বারবারই করছেন নির্মাতারা। সে সমস্যা রুখতে নতুন আপডেটে অটো পারমিশন বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখবে গুগল। কোনো অ্যাপ দীর্ঘদিন না ব্যবহার করলে সেটিকে দেওয়ার সব পারমিশন সরিয়ে নেওয়া হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই। এ ছাড়া নতুন ফিচার স্কোপড স্টোরেজ অ্যাপগুলো যাতে স্টোরেজে থাকা সব কিছু নয়, বরং শুধু তার প্রয়োজনীয় ডাটাই ফোন থেকে নিতে পারে, সেটার দিকেও খেয়াল রাখবে।
প্লেস্টোরের মাধ্যমে ওটিএ
সবচেয়ে বড় এবং প্রয়োজনীয় ফিচার বলা যায়, গুগল প্লেস্টোরের মাধ্যমে পুরো সিস্টেমের আপডেট ফোনে ইনস্টল করার সুবিধা। ফোন নির্মাতাদের গরিমসির শেষ একেবারেই নেই, ফোন তৈরির পরই যেন তাদের সব দায়িত্ব শেষ। গুগল অনেকবার সাবধান করার পরও তারা মাসিক নিরাপত্তা আপডেট ফোনে পৌঁছানোয় অনীহা দেখিয়ে থাকে। অ্যানড্রয়েড ১১ থেকে ফোনের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা আপডেট, হার্ডওয়্যারের ড্রাইভার আপডেট সরাসরি প্লেস্টোরের মাধ্যমেই প্রতিটি অ্যানড্রয়েড ডিভাইসে পৌঁছে দিতে পারবে গুগল। পুরো অ্যানড্রয়েড সংস্করণ আপডেট এভাবে করা সম্ভব নয়, তবে শুধু নিরাপত্তা আপডেট দেওয়া গেলেও তা হবে বিশাল পদক্ষেপ।