ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনা। যার জেরে আবারো দুই দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে তিক্ত সম্পর্ক। এরই মধ্যে দুই দেশের মধ্যে পরস্পরবিরোধী মনোভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ভারতের দিক থেকে চীনবিরোধী মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় ভারতের বাজারে চীনা পণ্যের বয়কট করার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারতের বাজারে চীনা প্রযুক্তিপণ্যের একচেটিয়া আধিপত্যে ভাটা পড়ছে বলে মনে করছেন তারা। এ সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় ব্র্যান্ডসহ চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিদেশী ব্র্যান্ডগুলো। এর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা এলজি। প্রতিষ্ঠানটি আবারো ভারতের স্মার্টফোনের বাজার ধরতে চায়। বর্তমান চীনবিরোধী মনোভাবের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় সুযোগ বলে মনে করছে এলজি। খবর ইটি টেলিকম।
ভারতের স্মার্টফোন বাজারের আধিপত্য এখন গ্রেট ওয়াল বা চীনের হাতে। ফলে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো চীনা পণ্যের সঙ্গে পেরে উঠতে সক্ষম হচ্ছে না। একই অবস্থা বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর। এ কারণেই বর্তমান সময়কেই এলজির মতো বিদেশী ব্র্যান্ডের নতুন করে বাজার ধরার অন্যতম সুযোগ বলে মনে করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্র্যান্ডটি আগামী দিওয়ালির আগ পর্যন্ত ভারতের বাজারে স্মার্টফোনের উৎপাদন আগের তুলনায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করছে। পাশাপাশি বিপণন ব্যবস্থাও সম্প্রসারিত করছে প্রতিষ্ঠানটি।
চীনবিরোধী মনোভাব যে অন্যান্য ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এক অর্থে আশীর্বাদ, সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এলজি ইলেকট্রনিক্সের মোবাইল কমিউনিকেশন বিভাগের বিজনেস প্রধান অ্যাডভেইট ভেইদিয়ার বক্তব্যে। ইটি টেলিকমের কাছে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি জানান, গত দুই মাসে ভারতের বাজারে তাদের স্মার্টফোনের বিক্রি ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মতে, চীনবিরোধী মনোভাবের মধ্যে অল্প সময়ের জন্য হলেও প্রতিষ্ঠানটি বড় আকারে লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ এ স্মার্টফোন বাজার ধরার জন্য বৈশ্বিক পোর্টফোলিও থেকে সরে এসে ব্যতিক্রম কিছু দেয়ার চেষ্টা করছে এলজি। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে চলতি বছর থেকে ‘ইন্ডিয়া স্পেসিফিক, ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি অনুসরণ করে পণ্য তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এলজির এ কর্মকর্তা বলেন, আগামী আগস্ট থেকে ভারতের বাজারে নতুন আরো ছয়টি স্মার্টফোন নিয়ে আসা হবে। ১০ হাজার রুপি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ফ্ল্যাগশিপের স্মার্টফোন থাকবে নতুন এ তালিকায়। এছাড়া আমরা বিতরণ চ্যানেল, অনলাইন ও অফলাইনের সক্ষমতাও বৃদ্ধি করছি। এছাড়া চলতি বছরের মধ্যে ভারতের ট্যাবলেটের বাজার ধরার লক্ষ্য নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।