ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন. পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেট ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অপরিহার্য। ইন্টারনেট খরচ নয় এটা শিক্ষার্থীদের জন্য বিনিয়োগ। তিনি ডিজিটাল অবকাঠামোর বিদ্যমান সুযোগ কাজে লাগিয়ে মেধাভিত্তিক উদ্যোক্তা উন্নয়নের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার রাতে ডিজিটাল প্লাটফর্মে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশ আয়োজিত স্টার্টআপ অপরচুনিটিস ইন আইসিটি এন্ড টেলিকমিউনিকেশন্স শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে পিছিয়ে থাকা কৃষিভিত্তিক একটা দেশ ডিজিটাল করাটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে শতশত বছরের পশ্চাৎপদতা অতিক্রম করে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এগারো বছরের বাংলাদেশ বিশ্বের দৃষ্টান্ত স্থাপনকারি দেশ হিসেবে গৌরব অর্জন করেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার জন্মভূমি কেনিয়াবাসীকে উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে অনুসরনের জন্য রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সেবায় বাংলাদেশকে পৃথিবীর দ্বিতীয়তম উল্লেখ করে বলেন জনগণের জন্য অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেবা ডিজিটাল করা হয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল রূপান্তরের কথা বলেছে। ওয়াল্ড ইকোনোমিক ফোরাম ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের কথা বলেছে ২০১৬ সালে। ইংল্যান্ড আমাদের একবছর পর, ভারত ২০১৪ সালে, মালদ্বীপ ২০১৫ সালে তাদের দেশকে ডিজিটাল ঘোাষণা করেছে এবং পাকিস্তান ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ডিজিটাল পাকিস্তান ঘোষণা করেছে।
মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশের তরুণরা অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে বলেন, করোনায় পৃথিবীতে যে পরিবর্তনটা এসেছে করোনার পরেও বিশ্ব আগের জায়গায় ফিরে যাবে না। আমাদের সম্ভাবনাময় প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হবে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মতো সেরা মেধাবী পৃথিবীতে কম আছে। তোমরা পারবে না এমন কাজ পৃথিবীতে নাই। স্টিভ জব পারলে তোমরাও পারবে। তিনি বলেন, ডেমোগ্রাফিকস ডিভিডেন্টের দিক থেকে বাংলাদেশ খুবই সুবিধাজনক অবস্থানে আছে এবং ২০৩১ সাল পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগ তরুণ জনগোষ্ঠী আমাদের বড় শক্তি। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতেই হবে। তিনি বলেন, উন্নত দেশ গুলোর সবচেয়ে বড় সংকটের নাম মানব সম্পদ। তাদের অবস্থাটা বিরাজ করছে আমাদের উল্টো। তাদের শতকরা ৬৫ ভাগ বৃদ্ধজনগোষ্ঠী। এই সুযোগটা আমাদের কোন অবস্থাতেই হাত ছাড়া করা যাবে না বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি বিশেষ অতিথির বক্তৃতায়, বাংলা ভাষার ডিজিটাল রূপান্তরে মোস্তাাফা জব্বার এর অবদান তুলে ধরে বলেন, ৯১ সালে আজকের কাগজ পত্রিকা পরিবারসহ দেশের সকল বাংলা পত্রিকার প্রকাশনা কম্পিউটারে সম্ভব হতো না যদি তার জন্ম না হতো।
অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তা রুবাবা দৌলা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।