বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি প্রতষ্ঠান হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি ট্যালেন্ট ফোরাম ২০২০’ আয়োজন করেছে। একই সঙ্গে আইসিটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম তৈরিতে সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা বিষয়ক বর্তমান প্রবণতা এবং তরুণদের দক্ষতা বিকাশের কৌশল বিষয়ে আজ (৪ আগস্ট) ‘হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি ট্যালেন্ট ফোরাম ২০২০’ আয়োজন করেছে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস। ‘কানেকশন, গ্লোরি, ফিউচার’ প্রতিপাদ্যে অনলাইনে আয়োজিত এ ফোরামে ২ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
ফোরামে আইসিটি খাতে দক্ষ কর্মীদের শূণ্যতা পূরণে নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রকাশ করে হুয়াওয়ে। পাশাপাশি, অনুষ্ঠিত এ ফোরামে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন খাতকে সমন্বিত উপায়ে একসাথে কাজ করারও আহ্বান জানায়।
আইসিটি খাতে দক্ষ কর্মীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা নিয়ে ফোরামে আলোচনা করেন উপস্থিত নানা খাত বিশেষজ্ঞ এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক অধ্যাপকগণ। ফোরামে তারা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে দক্ষ কর্মীর স্বল্পতা বিষয়ক সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে এ অঞ্চলে টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের পথ সুগম করতে সমন্বিত আইসিটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হুয়াওয়ে এর সার্টিফিকেশন প্রোগ্রামের ঘোষণা দেয়। যেসব শিক্ষার্থী ও আইসিটি প্র্যাকটিশনাররা হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যাকাডেমিতে যোগ দিয়েছেন কিংবা যোগদানের পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য এ প্রোগ্রাম উন্মুক্ত। ৪ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে এ প্রোগ্রাম এ বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। যেসব অংশগ্রহণকারী সবচেয়ে কম সময়ে উত্তীর্ণ হবেন, আগে উত্তীর্ণ হওয়ার ভিত্তিতে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে নানা ক্ষেত্রে বিস্তৃত পরিসরে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রত্যক্ষ করছে বিশ্ব। উন্নত আইসিটি ইকোসিস্টেম নির্মাণ নিয়ে বক্তব্যে হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের চিফ ডিজিটাল অফিসার ও এক্সিকিউটিভ কনসালটেন্ট মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘এখন ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগ ডাটা, ইন্টারনেট অব থিংস ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন আইসিটি খাতের মূলভিত্তি হিসেবে উল্লেখ্য।’
অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি চলে আসার ফলে কাজের ক্ষেত্রে আইসিটি বিষয়ক সাধারণ দক্ষতা আর যথেষ্ট নয়। মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড ঘোষণা দেন, ‘যেহেতু, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মপ্রয়োজনীয়তা পুনর্বিন্যাস করছে, সেক্ষেত্রে নতুন আইসিটি ল্যান্ডস্কেপ আনুমানিক ৫০ লাখ পেশাদারদের স্বল্পতা তৈরি করবে। দক্ষ কর্মীর উচ্চ চাহিদা পূরণে আমাদের লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরে ২০ লাখ আইসিটি পেশাদার তৈরি করা। এ বছর আমরা ২শ’র বেশি হুয়াওয়ে অ্যাকাডেমি তৈরি করবো এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ১০ হাজার সার্টিফিকেশন পরিচালনা করবো। আইসিটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম হুয়াওয়ের দীর্ঘমেয়াদী কৌশল এবং শিক্ষার্থী ও আইসিটি প্র্যাকটিশনাররা যাতে তাদের ক্যারিয়ারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে যেতে পারে, এক্ষেত্রে তাদের সহায়তায় আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় এইচএএলপি পার্টনারদের সাথে কাজ করবো।’
এআই ও ফাইভজি’র মতো প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। এ ডিজিটাল যুগে সম্ভাবনার সাথে দক্ষ কর্মীদের যুক্ত করতে নির্দিষ্ট মানদণ্ড তৈরিতে এ অঞ্চলে সমন্বিতভাবে বিভিন্ন খাতের একসাথে কাজ করতে হবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের মেধা বিকাশ কৌশলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে হুয়াওয়ে আইসিটি খাতে যোগ্য কর্মীদের নিয়ে আসতে একটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে। তিনটি উদ্যোগ নিয়ে এ ইকোসিস্টেম। উদ্যোগগুলো হলো: হুয়াওয়ে সার্টিফিকেশন, হুয়াওয়ে অ্যাকাডেমি এবং হুয়াওয়ে আইসিটি কম্পিটিশন।
ট্যালেন্ট সিস্টেম স্ট্যান্ডার্ড হুয়াওয়ে সার্টিফিকেশনে ২২টি কারিগরি ক্ষেত্রে এবং ১শ’ সার্টিফিকেশন এক্সাম রয়েছে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে রয়েছে ১৯ হাজার সহ সবমিলে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি আইসিটি শিক্ষার্থী ও কর্মীদের সার্টিফায়েড করা হয়েছে। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা হুয়াওয়ে আইসিটি অ্যাকাডেমি প্রতিবছর ৪৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণদানে ৯শ’র বেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রতিষ্ঠানটি ১০৩টি আইসিটি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে।