পরিচালন ব্যয় ব্যবস্থাপনা এবং অত্যাধুনিক আইসিটি সমাধানের মাধ্যমে বাজারে অবস্থান নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ক্লাউড সেবা। হুয়াওয়ে, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ এবং আইটি বিশেষজ্ঞসহ এ খাতের অংশীদারগণ হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড আয়োজিত হুয়াওয়ে ক্লাউড বাংলাদেশ সামিট অনলাইন শীর্ষক সামিটে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
‘গ্রো উইথ সার্জিং ক্লাউড’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত এ সামিটে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, স্টার্টআপ ও বৃহৎ শিল্প খাতগুলো কীভাবে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং শক্তিশালী ইকোসিস্টেম তৈরিতে কী ধরণের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে পারে তা নিয়েও সামিটে আলোচনা করা হয়।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝাং ঝেংজুন তাঁর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। হুয়াওয়ে ক্লাউড এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের চিফ টেকনিকাল অফিসার টেক গুয়ান নিও এবং হুয়াওয়ে ক্লাউড এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ইকোসিস্টেম ম্যানেজার টিনা ফায়ো নান্দার কিয়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও, সম্মেলনে ৫০ এরও বেশি হুয়াওয়ে পার্টনাররা উপস্থিত ছিলেন।
সামিটে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে এর ক্লাউড পার্টনার প্রোগ্রাম ও ফাইভজি, ক্লাউড এবং কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট বিশ্বখ্যাত এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তিগুলোর মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত বিকাশে সহায়তা করার জন্য ‘ইনক্লুসিভ এআই’ কৌশল সম্পর্কে অবহিত করে। এছাড়াও, সামিটে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হুয়াওয়ে ক্লাউড ডোমো সেন্টার দেখানো হয়। সামিটে অংশগ্রহণকারীগণ হুয়াওয়ে ক্লাউড ডেমো সেন্টারের নানা সমাধান প্রত্যক্ষ করেন।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝাং ঝেংজুন বলেন, ‘গত ২১ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে হুয়াওয়ে তাদের অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। এ দেশের দ্রুতবর্ধনশীল ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন খাতে কাজ করছে হুয়াওয়ে। বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত খুব দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এবং হুয়াওয়ে এ যাত্রায় ক্লাউড প্রযুক্তি এর লক্ষ্য: ‘অ্যাপ্লিকেশন ও ডাটা সক্ষমতা এবং ইন্টেলিজেন্ট বিশ্ব বিনির্মাণ’-এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, সকল অংশীদারদের সহায়তায় আমরা কার্যকরভাবে ক্লাউড সমাধানগুলো বিস্তৃত করতে পারবো এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে এবং একইসাথে সাফল্য অর্জন করতে পারবো।’
এ নিয়ে হুয়াওয়ে ক্লাউড এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের চিফ টেকনিকাল অফিসার টেক গুয়ান নিও বলেন, ‘আমাদের ক্লাউড সেবার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন খাতের নানা প্রতিষ্ঠানকে সেবা প্রদান করেছি। আমরা মনে করি, ক্লাউড সেবা সবার জন্য সহজলভ্য হওয়া উচিৎ। হুয়াওয়েতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমরা আমাদের পার্টনারদের সুবিধার জন্য জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’
টিনা ফায়ো কিয়াও বলেন, ‘প্রতিটি খাতে পার্টনারদের অ্যাপ্লিকেশন প্রয়োগ এবং এর উন্নয়ন ও বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাপেক অঞ্চল অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সম্ভাবনার দিকে বিকশিত হচ্ছে। হুয়াওয়ে ক্লাউড পার্টনার নেটওয়ার্কের (এইচপিসিএন) প্রোগ্রামগুলো এ অঞ্চলে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত করতে এবং টেকসই ও শক্তিশালী ইকোসিস্টেমের বিকাশে সহায়তা করবে।’
বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি, সেবা ও ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে হুয়াওয়ে ক্লাউড বৈশ্বিকভাবে সহজলভ্য, বিশ্বাসযোগ্য, উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম সুবিধা দিয়ে থাকে, যা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার সম্প্রসারণে সহায়তা করবে। হুয়াওয়ে ক্লাউডের ২১০টির বেশি পণ্য এবং বিভিন্ন ধরণের সমাধান রয়েছে। এ সমাধানগুলো হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে।
কীভাবে বিশ্বজুড়ে এআই বিভিন্ন খাতের রূপান্তর ঘটাচ্ছে এবং বৈশ্বিক মহামারি পরবর্তী পৃথিবীতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত করতে ভূমিকা রাখতে পারে এ নিয়ে অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন খাতের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও, হুয়াওয়ে ক্লাউড সেবা কীভাবে তাদের উদ্ভাবনে এবং নতুন ডিজাটাল ল্যান্ডস্কেপের মাথে মানিয়ে নিতে সহায়তা করছে তা নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
হুয়াওয়ে বৈশ্বিকভাবে হুয়াওয়ে ক্লাউড পার্টনার নেটওয়ার্ক (এইচপিসিএন) তৈরি করেছে, বাংলাদেশের পার্টনার সহ যেখানে ছয় হাজার ক্লাউড পার্টনার রয়েছে। খাতসমূহের প্রবৃদ্ধির জন্য এইচপিসিএন -এ পাঁচটি পার্টনার প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রোগ্রামগুলো হলো: সল্যুশন পার্টনার প্রোগ্রাম, সার্ভিস পার্টনার প্রোগ্রাম, সফটওয়্যার পার্টনার প্রোগ্রাম, মার্কেটপ্লেস প্রোগ্রাম, এআই পার্টনার ক্লাব প্রোগ্রাম এবং ক্যারিয়ার পার্টনার প্রোগ্রাম।
ক্যারিয়ার পার্টনারদের জন্য বিশেষভাবে রয়েছে এইচপিএন’র ক্যারিয়ার পার্টনার প্রোগ্রাম। ক্যারিয়ারগুলো তাদের নেটওয়ার্ক সক্ষমতা ও কাস্টমার রিলেশনশিপের সম্পূর্ণ ব্যবহার করে হুয়াওয়ে ক্লাউডের ক্লাউড নেটওয়ার্ক সিনার্জির মতো সমাধান নিয়ে আসার মাধ্যমে তাদের গ্রাহকদের জন্য ক্লাউড ও নেটওয়ার্ক সেবা দিতে পারে। এছাড়াও, বিভিন্ন খাতের পার্টনাররা অতিরিক্ত নানা সুবিধা পাবে, যার মধ্যে রয়েছে ইনসেনটিভ, অ্যাডিশনাল পিওসি টেস্ট ভাউচার, প্রজেক্ট অপোরচুনিটি শেয়ারিং ও স্পেশাল ইনসেনটিভ।
ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় পার্টনারদের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত করতে সমন্বিত ইকোসিস্টেম তৈরিতে কাজ করছে হুয়াওয়ে। প্রতিষ্ঠানটি এর শেয়ারড ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ১০ লাখেরও বেশি এন্টারপ্রাইজ ও ডেভলপারদের সহায়তা করেছে।