চীনে অনেক চেষ্টা করেও ফেসবুকে লগইন করা যায় না। কারণ চীনে ফেসবুক চলে না। চলে না ইউটিউবও। তাছাড়া আমরা যেসব ইন্টারনেট অ্যাপ সেবা ব্যবহার করি তার অনেক কিছুই নেই চীনে। আপনি চীনে ঢোকামাত্রই এগুলোর এক্সেস পাবেন না। তবে যেকোনো ভিপিএন ব্যবহার করে এসব কাজ চালানো যায়।
চীনে ফেসবুক কিংবা ইউটিউব না থাকলেও চীনারা ঠিকই প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে। প্রযুক্তি আর ভার্চুয়াল জগতে রাজত্ব করছে নিজস্ব উদ্ভাবন দিয়ে। পুরো চীনজুড়ে মানুষের হাতে হাতে ‘চীনা ফেসবুক’ খ্যাত উইচ্যাট। চীনে মুঠোফোন মানেই উইচ্যাট। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টে খাওয়া পর্যন্ত সবখানে উইচ্যাট পেমেন্ট দিয়ে চলে। চীনের ইন্টারনেট জগতে উইচ্যাটের মতো আর কোনো কিছুর এত গুরুত্ব নেই। চীনজুড়ে বিস্তৃত ইন্টারনেট-ভিত্তিক কোম্পানি টেনসেন্ট হচ্ছে উইচ্যাটের মালিক।
এছাড়া গুগলও বন্ধ চীনে। সারা বিশ্বের মানুষ যেখানে তথ্যভান্ডার হিসেবে গুগলকে ব্যবহার করে। সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে চীনে সেই গুগলের কোনো কদরই নেই। তবে গুগলের মতো যে সার্চ ইঞ্জিন চীনারা ব্যবহার করে তার নাম বাইডু। দেখা গেছে বাইডু সার্চ ইঞ্জিনটি দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট। এটি মানচিত্র, ক্লাউড স্টোরেজ এমনকি অনুবাদের জন্যও ব্যবহার করা হয়। চীনের সব গাড়ি চালক গাড়ি চালানোর সময়ও বাইডু ম্যাপ ব্যবহার করে।
চীনে ইউটিউবও নেই। ইউটিউবের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় আইকিউআই। এটি চীনের সবচেয়ে বড় ভিডিও সাইট। এ কারণে চীনে নেটফ্লিক্স বা ইউটিউবের কোনো ব্যবসা নেই। এ ছাড়া চীনের সবচেয়ে বড় মিউজিকের অনলাইন হাট হলো টেনসেন্ট মালিকানাধীন কিউকিউ।
চীনে উবারও নেই। উবারের মতো একটি মাত্র অ্যাপ চলে, যার নাম দিদি। এ ছাড়া চীনে টুইটারও চলে না। টুইটারের মতো সিনা ওয়েইবো অনেকের স্মার্টফোনে ব্যবহার হয়।
আর এসব কিছুর কারণ, চীনারা চায় স্বতন্ত্র থাকতে। তারা যতটা সম্ভব নিজেদের পণ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করে। এতদিন তো তারা ইংরেজিও শিখত না। কিন্তু এখন ব্যবসায়িক সুবিধা আদায়ের জন্য তারা এই ভাষা শিখছে। মোটকথা বাধ্য না হলে তারা অপরের জিনিস ব্যবহার করবে না।