ইউটিউবকে টেক্কা দিতে ভিডিও সেবা ‘ওয়াচ’ নিয়ে আসে ফেসবুক। ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী ফিচারটি চালুর পর খুব বেশি সময় লাগেনি জনপ্রিয় হতে। বর্তমানে প্রতিমাসে প্রায় ১২৫ কোটি ব্যবহারকারী ফিচারটির সুবিধা ভোগ করছেন। বলা যায়, ইউটিউবের সবচয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে ফেসবুকের এ ফিচার।
ফেসবুক অ্যাপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিডজি সিমো বলেছেন, ওয়াচ ব্যবহার বেড়েই চলেছে। অগণিত ব্যবহারকারী এতে বিভিন্ন ইভেন্ট, শো, খেলাধুলা, খবর এবং মিউজিক ভিডিও দেখে আসছেন। ভিডিও দেখাটা সামাজিক যোগাযোগ কার্যক্রমের অংশ—এ ধারণা থেকেই ওয়াচ তৈরি করা হয়েছে।
ফেসবুকের ভিডিও প্রোডাক্টস বিভাগের প্রধান পরেশ রাজওয়াত বলেন, ওয়াচে প্রবেশ করলেই যেন ব্যবহারকারীরা বিনোদিত হয়, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা এটাকে এতটা সহজ করেছি যে, তিনি যা দেখতে পছন্দ করেন, সেগুলো খুব দ্রুতই পেয়ে যাবেন। তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু থেকে আরো বেশি ভিডিও যেন তারা দেখতে পান, সে বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ওয়াচ ফিচারে শুধু গ্রাহকই বাড়ছে না, ভিডিও প্রকাশকের সংখ্যা দীর্ঘ হচ্ছে। তারণ তারা ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় বিজ্ঞাপন সুবিধার মাধ্যমে ওয়াচ প্ল্যাটফর্ম থেকে মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারছেন। ওয়াচ কমিউনিটি ও সহযোগীদের জন্য ভালো বিজ্ঞাপন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম ও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছ ফেসবুক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্টটি বলেছে, ওয়াচে ভিডিও নির্মাতারা ৫৫ শতাংশ অর্থ পাচ্ছেন। ফেসবুক নিচ্ছেন ৪৫ শতাংশ। অ্যাড ব্রেকে অংশ নিয়ে অর্থ আয় করতে হলে ভিডিও নির্মাতাদের কমপক্ষে তিন মিনিটের ভিডিও তৈরি করতে হবে। দুই মাসে ৩০ হাজার ব্যবহারকারী এক মিনিট করে ভিউ থাকতে হবে। ১০ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে।
করোনাকালে সারাবিশ্বের মানুষ যোগাযোগের জন্য অনেকটাই অনলাইন নির্ভর ছিলেন। তখন অধিক সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারী ওয়াচ ফিচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর মাধ্যমে ভিডিও নির্মাতা, শিল্পী, খেলাধুলার গেমস এবং খবর দেখার মাধ্যমে পুরো বিশ্বে কী হচ্ছে সে বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং আছেন।
ওয়াচ ফিচারে ‘লাইভ’ ভিডিও এর জন্য আরেকটি বিশেষায়িত সেকশন আছে উল্লেখ করে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়, লাতিন আমেরিকার প্রায় ১৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষ ফেসবুক লাইভে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করেন। ফুটবলের কোনো ভিডিও ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি দর্শকের দেখা ম্যাচ এটাই।
বর্তমানে প্রতিমাসে প্রায় ১২৫ কোটি ব্যবহারকারী ফেসবুকের ওয়াচ ফিচার ব্যবহার করছেন। এদিকে গুগল ইনকরপোরেশনের ইউটিউব জানিয়েছে, তাদের ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইটটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা মাসে ২শ’ কোটিতে পৌঁছেছে। এতে বোঝা যায়, ইউটিউবকে খুব শিগগিরই ছাড়িয়ে যেতে পারে ফেসবুক।
জনপ্রিয়তার দৌড়ে অন্যসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চাইতে অনেক এগিয়ে আছে ফেসবুক। ব্যবহারকারীদের কাছে সহজবোধ্য ও সহজে ব্যবহারযোগ্য ফিচারগুলো যুক্ত করার কারণেই এর জনপ্রিয়তা দিনদিন বাড়ছে বলে মনে করেন আইটি বিশেষজ্ঞরা।