বর্তমান সময়ে “ডিজিটাল হালখাতা” বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্রযুক্তি। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ গুলোর জন্য৷ সামান্য মোবাইল ব্যবহার করার জ্ঞান থাকলে সহজেই ব্যবহার করতে পারবে এই ডিজিটাল হালখাতা টি । ডিজিটাল হালখাতার প্রতিষ্ঠাতারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের মোট ২৬ টি জেলায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷ বিশেষ করে উত্তর অঞ্চলের মানুষ এর মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বেশি৷
ইন্টারেক্টিভ ভয়েসের মাধ্যমে এই জিনিসটি কাজ করে। অর্থাৎ মোবাইল ফোনে আপনার পণ্যের হিসাব এবং আইডি নম্বর ভয়েস আকারে বলে সেটি আপনার ডিজিটাল হালখাতায় যোগ হয়ে যাবে । যেমন “আমি দুই প্যাকেট চিপস বিক্রি করলাম, ২০ টাকা দিয়ে, আইডি নম্বর ৮৩৮৭!” ব্যাপারটা কিছুটা এমন।
যেহেতু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এই ডিজিটাল হালখাতা বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে সুতরাং ভাষার রকমফের থাকাটাই স্বাভাবিক। এবং এটি প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালকদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ তবে তারপরও তারা দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে যাতে তারা এটি ব্যবহারের সময় তার একটু শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেন৷
প্রতিষ্ঠানের একজন জানিয়েছে, “আমরা প্রথম দিকে মাত্র ১২ টি দোকানের সাথে এই প্রজেক্টটি শুরু করি । কিন্তু এখন আমাদের দোকান সংখ্যা ১২ লাখেরো বেশি। বাংলাদেশ ছাড়াও সম্প্রতি সময়ে আমরা মিয়ানমারের সাথে ও একটি প্রকল্প শুরু করতে চলেছি। প্রথমদিকে দোকানিরা বিশ্বাস করতে চাচ্ছিল না৷ কিন্তু তারপর যখন তারা সত্যি সত্যি ইন্টারেক্টিভ ভয়েস এর মাধ্যমে হালখাতায় একটি পণ্যের দাম তালিকাভুক্ত করল এবং সাথে সাথে যখন একটি টেক্সট তাদের মোবাইলে চলে এলো তখন তারা অবাক হয়ে গেল । সত্যি ব্যাপারটা বিস্ময়কর। যে কাজটা গুগোল এলেক্সা করছে সেটা ফোনের মাধ্যমে কীভাবে সম্ভব?”
শুধু বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের নয় এখন এই প্রযুক্তির ছড়িয়ে পড়েছে জাপানে ৷ জাপানের একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানটি সাথে উদ্যোগ শুরু করেছে৷ এখানে মোবাইল ফোনে ইন্টারেক্টিভ ভয়েসের মাধ্যমে কোন কিছু কমান্ড করা যাবে। তবে বাংলাদেশের মতো এখানে শুধুমাত্র ডিজিটাল হালখাতা নয় তার পাশাপাশি রোবটিক হ্যান্ড হিসেবে কাজ করবে প্রকল্প টি । ইন্টারেক্টিভ ভয়েস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং হার্ড থিংকিং এই তিনটি সমন্বয় কাজ করছে প্রযুক্তিটি৷
এ ধরনের প্রযুক্তি হয়তোবা অনেক রয়েছে৷ তবে তার জন্য সেই গ্যাজেটটিকে কমান্ড করার জন্য বেশকিছু কিওয়ার্ড রয়েছে অনেক সময় গেজেটটির একটি নির্দিষ্ট অংশে ক্লিক করে কাজ করাতে হয়৷ যা বয়স্কদের এবং অনঅভিজ্ঞদের কাছে বেশ বিরক্তিকর। তবে ইন্টারেক্টিভ ভয়েসের মাধ্যমে কাজটি সম্পাদন হলে সকলের কাছে ধীরে ধীরে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
এটিতে অনেকেই তাদের নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে কমান্ড করবে। সুতরাং সেই ভাষা গুলোর কমান্ড বোঝার ক্ষমতা নাও থাকতে পারে৷ তবে ডিজিটাল হালখাতার বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলোর আঞ্চলিক ভাষা বোঝার নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে।
সার্বিকভাবে এই প্রযুক্তিকে বলা হয় ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট। গুগলের একটি ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট আমাদের সকলের কাছে বেশ পরিচিত। সেটি হচ্ছে ” ভয়েস টাইপিং”। এর মাধ্যমে শুদ্ধ ভাষা উচ্চারণ করতে হয়, তবেই কেবল মাত্র এটি ইনপুট টেক্সটকে আউটপুট টেক্সটে রুপান্তরিত করে।
কিন্তু বাংলাদেশের এই ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সহজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। এবং এটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারিক ধাপ ডিজিটাল হালখাতা৷
প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের দাবি ডিজিটাল হালখাতা বেশ ভালোভাবে কাজ করছে। আমরা সারা বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেটি এটি এমন একটি ইন্টারেক্টিভ ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট তৈরি করতে পেরেছে যার মাধ্যমে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেও সহজেই কাজ করা যেতে পারে । তবে সম্প্রতি সময় আমরা বাংলাদেশ বাদে আরো কয়েকটি দেশে আমাদের প্রকল্প শুরু করেছি। এর মধ্যে মিয়ানমার এবং জাপানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ আশাবাদী অদূর ভবিষ্যতে আমরা সফলতা অর্জন করব। এর মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল হবে।