ইউটিউবের একটি ফিচার নাম ‘সুপার চ্যাট’। এ দেশের অনেকেই হয়তো ‘সুপার চ্যাট’ নামটি শোনেননি । সুপার চ্যাট’ এমন এক ইউটিউবের ফিচার, যার মাধ্যমে সহজেই আয় করা সম্ভব। ফিচারটির সাহায্যে কোনও ইউটিউব লাইভে দর্শকরা অর্থের বিনিময়ে কমেন্ট করতে পারেন। আর দর্শকদের দেওয়া এই অর্থ, যিনি কনটেন্ট ক্রিয়েটর তিনি পাবেন।
ইউটিউবের যেকোনও লাইভে দর্শকরা কমেন্ট করেন এবং সেগুলো লাইভে আসা ব্যক্তির নজরে সব সময়ে পরে না। কিন্তু এই ফিচার যাকে সুপার চ্যাট বলা হচ্ছে, এর মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে কমেন্ট করলে সেটি অন্যদের কমেন্ট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে নজরে আসবে। ওই কমেন্টের রঙ হবে ভিন্ন এবং সেটি পিন হয়ে থাকবে। ফলে সুপার চ্যাটের মাধ্যমে করা কমেন্ট ওই কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নজরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যাদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে শুধু তারাই ইউটিউবের এই ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন।
২০১৭ সালের শুরুর দিকে সুপার চ্যাট চালু হয়। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশে ফিচারটি চালু থাকলেও বাংলাদেশে এখনও চালু হয়নি। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে অনেকদিন আগে এটি চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দর্শকরা এই ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদিকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে সুপার চ্যাট ব্যবহার করতে হলে ইউটিউবের নির্দিষ্ট করে দেওয়া অঞ্চলের বাসিন্দা এবং বয়স ১৮-এর বেশি হতে হবে। ‘এজ রেস্ট্রিক্টেড’, ‘প্রাইভেট’ ও ‘মেড ফর কিডস’ আইটেমের ক্ষেত্রে এই ফিচার কার্যকরী হবে না।
যেভাবে কাজ করে ‘সুপার চ্যাট’
কোন কনটেন্ট ক্রিয়েটর লাইভে এলে দর্শক হিসেবে আপনি চ্যাট উইন্ডোর পাশে একটি ‘ক্যাশ সিম্বল’ বা ডলারের প্রতীক দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে ভিডিও ক্রিয়েটরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া যাবে এবং এই টাকার বিনিময়েই কমেন্ট সবার ওপরে থাকবে । এছাড়া টাকার বিনিময়ে করা কমেন্টের রঙও হবে ভিন্ন, যেন সহজেই সেটি কনটেন্ট ক্রিয়েটরের চোখে পড়ে।
অন্যদিকে লাইভে আসা ব্যক্তি ‘সুপার চ্যাট’ অপশনে ক্লিক করলেই টাকার বিনিময়ে করা সব কমেন্ট একসঙ্গে দেখতে পাবেন। এতে ওইসব কমেন্টের উত্তর দেওয়া সহজ হবে। তবে বিষয়টি এমন নয় যে সুপার চ্যাটে কমেন্টের উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক। সেটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে কনটেন্ট ক্রিয়েটরের ওপর।
তবে দর্শক হিসেবে সুপার চ্যাট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যেকোনও লাইভে আপনার কমেন্ট পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত সবার ওপরে থাকবে। কমেন্ট কতক্ষণ পিনড থাকবে তা নির্ভর করবে কি পরিমাণ অর্থ প্রদান করবেন তার ওপর। মনে রাখতে হবে, কোনও লাইভে আপনি চাইলেই যেকোনও কমেন্ট করতে পারবেন না। কারণ, কনটেন্ট ক্রিয়েটর কিছু কি-ওয়ার্ড ব্ল্যাকলিস্টে রাখতে পারেন। আর ওই ধরনের কি-ওয়ার্ড আপনি ব্যবহার করতে চাইলেও সেটি সম্ভব হবে না।
কে পাবেন সুপার চ্যাটের অর্থ?
ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে— সুপার চ্যাটের বেশিরভাগ অর্থ কনটেন্ট ক্রিয়েটরই পাবেন। এটি মূলত ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জনের আরেকটি মাধ্যম। অবশ্য সুপার চ্যাট থেকে কিছু অর্থ স্বাভাবিক ভাবেই ইউটিউব কর্তৃপক্ষ নিয়ে থাকে।
দেশে কবে চালু হবে সুপার চ্যাট?
দেশে সুপার চ্যাট কবে চালু হবে সে বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ নতুন করে আরও কোনও দেশে ফিচারটি চালু করবে কিনা, সেটিও নিশ্চিত নয়। তবে প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টদের ধারণা, হয়তো তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে সুপার চ্যাট ফিচার চালু হবে। এতে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইউটিউবারদের আয়ের নতুন একটি পথ খুলতে যেতে পারে।