ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার বিপজ্জনক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। মেধা ও সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই তথ্য সন্ত্রাস মোককাবেলায় কাজ করতে হবে। সরকার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ওয়েবিনারে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি আয়োজিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃায় এসব কথা বলেন।
আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এর সভাপতিত্বে এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির নেতা শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কাজী মকুল,আনিস মনির, অমি রহমান পিয়াল , লিনা পারভিনপ্রমূখ বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। ১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ২১ বছর বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন, রাজনীতির মহাকাব্যের মহানায়ক। ষাটের দশকে পৃথিবীর অনেক নেতার জীবনী অধ্যয়ন করেছি কিন্তু এখন তূলনা করলে দেখি বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক এবং অদ্বিতীয়।
মন্ত্রী দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ক্ষতিকর যে কোন ওয়েবসাইট বন্ধ করার সক্ষমতা সরকারের আছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহের কনটেন্ট বন্ধ করা যায় না। এ ব্যাপারে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গপুরসহ কয়েকটি দেশের গৃহীত আইনগত প্রক্রিয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা খুব বেশী একটা সাড়া এক্ষেত্রে দিচ্ছে না। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে সরকার এ বিষয়ে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগের সাথে কয়েকটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার হচ্ছে, গুজব ছড়ানো হচ্ছে কিন্তু প্রতিবাদের জন্য সুংসগঠিত প্লাটফর্ম গড়ে ওঠেনি। তাদেরকে আইনগতভাবে এবং মিথ্যাচার মোকাবেলায় অনলাইন বাহিনীর দরকার। তারা সক্রিয় হলে গুজব রটনাকারীরা সুবিধা করতে পারবে না। তিনি বলেন, পরাজিত শক্তির অপপ্রচারের বিপরীতে সত্য তথ্য তুলে ধরতে আমরা পারিনা। এই শুন্যতা পূরণ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে অনলাইন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা অন লাইনে জ্ঞানভিত্তিক লড়াই চালিয়ে যাওযার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, প্রচারণার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর জীবনালেখ্য তুলে ধরতে হবে। তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল সেই অপশক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দেশে নৈরাজ্য, অস্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়াতে সবচেয়ে বেশী তৎপর।