ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় খেলা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা যারা এই খেলাটিকে পছন্দ করি, তারা বেশিরভাগই হয়তো টিভি’তে আর নয়তো আমাদের স্মার্টফোনে এই খেলাটি উপভোগ করি। যারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখে তাদের থেকে, আমরা বেশ ভালোভাবেই খেলাটা দেখে উপভোগ করি। কারন টিভি বা স্মার্টফোনে যতটা নিখুত ভাবে খেলাটা উপভোগ করা যায়, ততটা নিখুত ভাবে স্টেডিয়ামে সেই আনন্দ পাওয়া যায় না। আমাদের এই নিখুতভাবে খেলাটি দেখার একমাত্র কারন হচ্ছে উন্নতমানের প্রযুক্তি। ক্রিকেট খেলার মধ্যে ব্যাবহার হয়ে থাকে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি। আজ কথা হবে এই প্রযুক্তি নিয়েই। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে আসা যাক, কিছু উন্নতমানের প্রযুক্তির ব্যাবহারঃ⤵
১. হটস্পটঃ
যারা ক্রিকেট ভক্ত তারা অনেকেই এই প্রযুক্তির সাথে পরিচিত। আসলে এই জিনিসটি হচ্ছে ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কোথাও ক্রিকেট বলটি স্পর্শ করেছে কিনা, সেটা নিখুতভাবে ফুটিয়া তোলা। ব্যাটে স্পর্শ লাগার পরে যদি কোনো ফিল্ডার বলটি ক্যাচ করে, তাহলে সেটা আউট হবে। কিন্তু, অনেক সময় এরকম আউট দিতে কনফিউশনে আম্পায়ার ভুল করেন। আম্পায়ারের কনফিউশন দূর করার জন্য এই প্রযুক্তিটি তৈরী হয় ক্রিকেটে।
২. এলইডি উইকেটঃ
আমরা অনেকেই লক্ষ্য করেছি ক্রিকেটের উইকেট গুলো বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। একে অনেকে স্ট্যাম্পও বলে থাকে। তো বিভিন্ন ধরনের মধ্যে এরকমই একটি ধরন হচ্ছে ‘এলইডি উইকেট’। যেটা বের হয়েছে কিছু বছর আগে। আগে অনেক সময় দেখা যেতো, বল স্ট্যাম্পে লেগেছে ঠিকই কিন্তু সেটার বেল পরেনি। যে কারনে তখন ব্যাটসম্যান আউটও হতে পারেনা। এই কারনেই এই ‘এলইডি উইকেট’ সিস্টেম করা হয়েছে। হয়তো উইকেট অথবা উইকেটের উপরে থাকা দুইটি বেলের মধ্যে এই লাইটিং সিস্টেম করা থাকে। যেটাতে বল লাগার পর সাথে সাথে জ্বলে উঠবে এবং সহজেই ব্যাটসম্যান আউট হয়েছে কিনা বুঝা যাবে।
৩. স্পাইডার ক্যামঃ
এই ক্যামেরাটি ক্রিকেটের অন্যতম এক উন্নতমানের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন। যেটা ফুটবল খেলাতেও ব্যাবহার হয়। এই ক্যামেরা দিয়ে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে স্টেডিয়াম, মাঠ অথবা মাঠের ভিতরের বিভিন্ন সিন গুলো সুন্দরভাবে ধারন করে। যেটা দেখতে অনেক অসাধারণ লাগে।
৪. সুপার শপারঃ
খেলা চলার আগে বা পরে অনেক সময় বৃষ্টির দেখা দেয়। আবার অনেক সময় খেলায় মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দেয়। তো এজন্য এই প্রযুক্তি। এই সুপার শপার মূলত একটি গাড়ি। বৃষ্টির পানি তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নেয়ার জন্যই এই গাড়িটি তৈরী করা হয়েছে। এ কারনে অনেক সময় খেলা অফ হয়ে যাওয়ার প্রবনতা থাকলেও, এটির মাধ্যমে সেটা আবার শুরু করা যায়।
৫. হাওক আইঃ
হাওক শব্দটার বাংলা অর্থ হচ্ছে বাজপাখি। অর্থাৎ, ‘হাওক আই’ মানে হচ্ছে বাজপাখির চোখ। অনেকে হয়তো ভাবছেন ক্রিকেটের সাথে এটার আবার কি সম্পর্ক। আসলে এই প্রযুক্তিটি হচ্ছে একটি ক্যামেরা। আমরা অনেক সময় দেখি কোনো ব্যাটসম্যানের পায়ে বল লেগে আউট হতে। অনেক সময় আম্পায়ার ভুলে আউট দেয় অথবা দেয় না। তবে, এই ‘হাওক আই’ এর মাধ্যমে এটি ক্লিয়ার করা যায়। ক্রিকেট বলটি উইকেট বরাবর আছে কিনা অথবা লাইনে আছে কিনা সেগুলো স্পষ্টত দেখা যায় এই ‘হাওক আই’তে।
৬. বল স্পিড মিজারমেন্টঃ
আমরা অনেকেই ক্রিকেট খেলা দেখার সময় লক্ষ্য করি, বোলাররা বল করার পর তাদের বলের স্পিড কত হয়েছে সেটা দেখানো হয়। এই মিজারমেন্ট দিয়েই সেটার হিসেব রাখা হয়। এই প্রযুক্তিটি অনেক আগে থেকেই ক্রিকেটে ব্যাবহার হয়ে আসছে। বোলারের বলের স্পিড অথবা সে কতটা স্লো বল করেছে, এগুলো সব ভালোমতোই দেখা যায় এই প্রযুক্তির মাধ্যমে।