অ্যামাজন, ফেসবুক, গুগল এবং অ্যাপলে সর্বগ্রাসী হয়ে ওঠা দেখাতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের অভিযোগ হচ্ছে এসব বড় বড় কোম্পানি কিছু সম্ভাবনাময় ছোট ছোট কোম্পানিগুলোকে বেড়ে উঠতে দিচ্ছে না। এছাড়াও এরা নাক গলাচ্ছে রাজনীতিতে এবং তাদের তথ্যের অবাধ ভান্ডার দিয়ে নিজের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রণ করছে সাধারণ মানুষের পছন্দ আগে শুরু করে রাষ্ট্রযন্ত্র কেও।
শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, অনলাইন ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন, প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল এবং জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মালিকানা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহীদের অবস্থা অনেকটাই সিরিয়াস ছিলো। এমন অবস্থায় তাদের একটি ‘ভার্চুয়াল কনগ্রেসে’ দেখা গিয়েছিলো। সেখানে শুনানির মূল বিষয় ছিলো ‘দিনের পর দিন এসব প্রযুক্তি কোম্পানির প্রচুর পরিমাণে শক্তিশালী হয়ে ওঠা।
বিশ্বজুড়ে ‘করোনা সংক্রমণ’ দেখা দেয়ার পর থেকেই বেশিরভাগ ব্যাবসা বানিজ্যই বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু, তখনও এসব প্রযুক্তি চলছিলো। এমনকি সেই অবস্থায় এসব আরও বেশী পরিমানে ব্যাবহার করে ব্যাবহারকারীরা৷ সেই সাথে তাদের মুনফাও অনেক বেড়ে গিয়েছে এর মাধ্যমে। হিসেব বলছে এই চারটি কোম্পানির বাজারমূল্য বেড়ে দারিয়েছে প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। যেটি অবশ্যই অনেক বড় একটি অংক।
অপ্রতিরোধ্য এসব কোম্পানিকে বশে আনতে প্রতিনিধি পরিষদের ‘হাল জুডিশেয়ারি’ কমিটির এন্টিট্রাস্ট প্যানেল কাজ করছে দীর্ঘদিন থেকেই। যেখানে ফেইসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো হুমকি দিয়ে ইন্সটাগ্রাম কিনে নেয়ার। যেটি জানিয়েছেন ডেমোক্রেট প্রতিনিধি ‘প্রমিলা জয়াপাল’। এরপর ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ‘মার্ক জাকারবার্গ’ এটির প্রতি নিন্দা জানান।
এই একই রকম অভিযোগ ছিলো ‘অ্যাপলে’র প্রতিও। প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপ স্টোরে অন্যান্য অ্যাপসকে জনপ্রিয় হতে বাধা দেয়। এছাড়াও বেশিরভাগ লোকজনই ‘অ্যাপ স্টোরে’ শুধুমাত্র ‘অ্যাপলে’র অ্যাপসগুলোই ব্যাবহার করছে।
একইভাবে অ্যামাজনও প্রতিযোগী ছোট প্রতিষ্ঠানকে বিকশিত হবার আগেই অধিগ্রহণ করে বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নির্বাহীরা।
অ্যাপলে’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ‘টিম কুক’ এসব অভিযোগের বিপক্ষে মত দেয়। এছাড়াও অন্যান্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা ও একই নিন্দা জানায়। বিশেষ করে অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ‘জেফ বোজেস’ এসব অভিযোগ মানতেই নারাজ।
এছাড়াও বাদ যায়নি রাজনীতিতে এসব প্রযুক্তি জায়ান্টদের অন্যায় নাক গলানোর বিষয়ও। এই ব্যাপার নিয়ে গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ‘সুন্দর পিচাই’ জানান ‘আমাদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।আমি চিন্তা করি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন অবশ্যই ফ্রী স্পিচ এবং ডেমোক্রেটিক সোসাইটির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ’।
এই শুনানি এমন এক সময়ে হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে দ্রুতই নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী কৌশল তৈরীতে কংগ্রেসকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তখন চাচ্ছিলেন যে এই প্রযুক্তিগুলো ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’ ছাড়াও অন্যান্য দেশেও ব্যাবহার বন্ধ হয়ে যাক। তবে, পরিশেষে সেটা হয়নি। যদিও আমাদের দেশে খুব কম লোকই ‘অ্যাপলে’র ফোন ব্যাবহার করে। কিন্তু, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ‘অ্যাপলে’র ফোনগুলোর চাহিদা অন্যান্য ফোনের চেয়ে বেশি থাকে। এছাড়াও অন্য সকল প্রযুক্তিগুলোর চাহিদাও বর্তমানে যে পরিমানে বেড়ে গিয়েছে এতে মনে হয়না এসব প্রযুক্তি কখনও ডাউন হয়ে যাবে।