শহরের মত নাগরিক সেবা দেশের প্রতিটি গ্রামে পৌঁছানো এবং সকলকে প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে এক লাখ নয় হাজার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে আইসিটি প্রশিক্ষণ এবং অবকাঠামো স্থাপন কর্মসূচির আওতায় স্থাপিত ‘ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেইনিং (ডি-সেট) সেন্টারের উদ্বোধন উপলক্ষে সোমবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ইডিসি প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে দেশের ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৫ হাজার মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও সাড়ে তিন হাজার ভূমি অফিসসহ প্রায় ৪০ হাজার সরকারি দপ্তর মিলিয়ে এক লাখ নয় হাজার সকরারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের অধীনে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিকসহ সকল কার্যক্রমে প্রযুক্তিকে যত বেশি ব্যবহার করা যাবে, তত বেশি সময়, অর্থ ও দুর্নীতি কমিয়ে সেবার মান বৃদ্ধি করা যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “আইসিটি বিভাগ ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’, ‘তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’ ও ‘সমৃদ্ধি বাংলাদেশ’- এই তিনটি বাতিঘর নিয়ে কাজ করছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যেকটি গ্রামেই শহরের নাগরিক সেবা পৌছানো, তরুণদের প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করা এবং তরুণদের জন্য আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।”
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আইসিটি সম্পর্কে ধারণা দিতে দেশে প্রায় আট হাজার কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবং আরও পাঁচ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে বলে তথ্য দেন প্রতিমন্ত্রী।
ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাবগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার ও তথ্যপ্রযুক্তিজ্ঞান অর্জনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষতা অর্জন করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে এবং সরকারের শত-শত কোটি টাকা যেন বিফলে না যায়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রোগ্রামারসহ জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তরুণরা যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসেই প্রযুক্তিশিক্ষা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সারা দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ৫৫৫টি ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। এছাড়া ডেনমার্ক সরকারের সহায়তায় চর-বিল-হাওয়রাঞ্চলেও ডি-সেট স্থাপন করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম, প্রকল্প পরিচালক ফিরোজ সরকার বক্তব্য দেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামের ছিটমহলের ৪০ জন প্রশিক্ষণার্থীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে ডি-সেট সেন্টারের উদ্বোধন করেন।