আসলে আমাদের দেশের অনেক মানুষই জানেন না যে সফটওয়্যার নামে এক অদৃশ্য জিনিস আছে যা নিজের পকেটের টাকা দিয়ে কিনে ব্যবহার করতে হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশের ৯০% এর বেশি কম্পিউটারে ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। তাহলে কেন বাংলাদেশে এতবেশি সফটওয়্যার পাইরেসি তা নিয়ে হয়ত আপনাদের চিন্তা শুরু হয়ে গেছে। তবে চলুন জেনে নেই বাংলাদেশে এত বেশি সফটওয়্যার পাইরেসি কেন হয়।
সবার আগে জানতে হবে যে আসলে পাইরেসি কী জিনিস। যখন আমরা কোন পেইড সার্ভিস বা সফটওয়্যার কোনভাবে মডিফাই বা ক্র্যাক করে ব্যবহার করি তখন সেটাকে আমরা ডিজিটাল জগতে পাইরেসি বলে থাকি।
আমাদের দেশে পাইরেসি বেশি হবার বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত আমাদের দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা। হ্যাঁ, আমরা যদি একটু বাংলাদেশে উইন্ডোজ ১০ এর খুচরা মূল্য দেখি তাহলে দেখব যে এর মূল্য ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে। আমরা অনেকেই এত টাকা দিয়ে একটা সফটওয়্যার কেনার মত সাবলম্বি নই। তাই আমরা অনেকেই সফটওয়্যার ক্র্যাক করে ব্যবহার করি।
আরেকটা মূল কারণ হলো আমাদের গবেষণার অভাব। আমরা অনেকেই জানিই না যে প্রিমিয়াম সফটওয়্যার গুলোরও বেশ কিছু অলটারনেটিভ আছে। আমরা চাইলেই উইন্ডোজ এর পরিবর্তে লিনাক্স ব্যবহার করতে পারতাম। যেমন আমি এই লেখাটি আমার লিনাক্স কম্পিউটারে বসে লিখছি কেননা আমার উইন্ডোজ কেনার সামর্থ্য নেই আর আমি জেনুইন ব্যবহার করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তাছাড়া আরও অনেক কারণ আছে আমার লিনাক্স ব্যবহার করার সেটা নিয়ে অন্য এক লেখায় আলোচনা করব। আর শুধু উইন্ডোজ নয়, অফিস, ফটোশপ, ভিডিও এডিটর এগুলোরও বেশ কিছু অলটারনেটিভ আছে মার্কেটে। আপনি চাইলে সেগুলো দেখে আসতে পারেন।
আরেকটা মূল কারণ হলো আমাদের অপরাধ বোধের অভাব। এইটা অনেকের কাছেই খারাপ লাগতে পারে তাই আগেই ক্ষমা চাচ্ছি কিন্তু আমরা অনেকেই আসলে জানি না যে সফটওয়্যার পাইরেসি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। আবার অনেকে জেনেও না জানার ভান করে ব্যবহার করে যাচ্ছি। তবে হ্যাঁ, আপনার বিরুদ্ধে আইন ততক্ষণ পর্যন্ত অবস্থান নেবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি যাদের সফটওয়্যার বা সার্ভিস পাইরেসি করেছেন তারা আপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।
এই অবস্থায় আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে আসলে মাইক্রোসফট বা এডোবি কি জানেনা যে আমরা তাদের সফটওয়্যার ও সার্ভিস ক্র্যাক করে ব্যবহার করছি? তবে সেটা নিয়ে আলচোনা করব অন্য এক লেখায় ততক্ষণ পর্যন্ত টেকজুম ডট টিভির সাথেই থাকুন।