আমরা অনেকেই ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। তবে আমরা যারা জানিনা ক্র্যাক সফটওয়্যার বা সফটওয়্যার পাইরেসি কী জিনিস, তাদের জন্য আবারও বলছি। যখন আপনি কোন পেইড বা প্রিমিয়াম সার্ভিস বা সফটওয়্যার অসদুপায়ে ফ্রিতে ব্যবহার করবেন তখন সেটা বলা হয় ডিজিটাল পাইরেসি। আর এক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের ৯০% কম্পিউটারই ক্র্যাক সফটওয়্যার এ চলে। তাহলে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, আমরা এত পরিমাণে ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করি তা কি সফটওয়্যার কম্পানি জানে না? আবার এমনও মনে হতে পারে যে বাংলাদেশের সাইবার আইন কি তাহলে এতটাই দুর্বল যে কেউ ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারে আর এতে কোন সমস্যাও হবে না? তবে চলুন জেনে নেই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর।
আসলে আমাদের দেশের সাইবার আইন নিজের স্থানে অটুট এবং যথেষ্ট শক্ত আছে। আসলে শুধু আমাদের দেশেরই নয় অন্য সকল দেশের আইনই এমন যে যতক্ষণ না পর্যন্ত যাদের সফটওয়্যার ক্র্যাক করা হয়েছে তারা আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইন কিছুই করবে না।
তাহলে আপনার হয়ত আরও ভাবতে পারেন যে আমরা যাদের সফটওয়্যার ক্র্যাক করি তারা কি আমাদের কথা জানেই না নাকি আমাদের দেখেও দেখছে না? আসলে তারা আমাদের কথা জানে। কিন্তু তারা যদি আমাদের এই ৯০% মানুষের ওপর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে তাহলে একবার ভাবুন বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা কেমন কমে যেতে পারে। আর যদি কমে নাও যায় তাহলেও ৮০% বা এর চাইতেও বেশি মানুষ লিনাক্সে চলে যাবে। এতে কী হতে পারে একবার ভেবে দেখেছেন? বাংলাদেশে এখন যেমন লিনাক্স ব্যবহারকারী পাওয়া কঠিন তেমনি তখন উইন্ডোজ ব্যবহারকারী পাওয়া কষ্টের হয়ে যাবে। আর এর ফলে জনপ্রিয়তা ও ব্যবসায় ধ্বস নামবে মাইক্রোসফট এর। কেননা বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই টাকা খরচ করে সফটওয়্যার কিনতে চান না কেননা তাদের ক্রয় ক্ষমতা নেই।
শুধু উইন্ডোজ নয়, এডোবি প্রোডাক্ট যেমন আফটার ইফেক্ট, ফটোশপ, এনিমেট, প্রিমিয়ার প্রো এইগুলোর ব্যবহারকারী একেবারেই নিচে নেমে যাবে। আবার আমরা যারা প্রিমিয়াম অ্যান্টিভাইরাস বা গেম খেলে থাকি এতেও মাইক্রোসফট এর বেশ লাভ হয়। আর মূলত এই জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার ভয়েই মাইক্রোসফট বা এডোবিকে বাধ্য হয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে।
তবে আইনি ঝামেলার সম্ভাবনা কম থাকলেও একেবারে যে নেই তা কিন্তু না। যখন এই ক্র্যাকিং একেবারে বাল্ক আকারে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে থাকে তখন এইসব কম্পানি তাদের বিরুদ্ধে স্থান নেয়। তবে আমরা আইনি ঝামেলা থেকে বেঁচে গেলেও এইরকম ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে আমাদের বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে সেগুলো নিয়ে অন্য কোন এক লেখায় আলোচনা করব। ততক্ষণ পর্যন্ত ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং টেকজুম ডট টিভির সাথেই থাকুন।