বর্তমানে দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় তরুণ প্রজন্মের মাঝে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি। চায়না প্রতিষ্ঠানের ২০১৯ সালে তৈরি করা যুদ্ধ গেম ফি্র ফায়ার এখন ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গেম ডেভলপার প্রতিষ্ঠান ব্লু হোয়েলের অনলাইন ভিডিও গেমটির মতোই তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই গেম দুটির ব্যবহারের নেতিবাচকতা এখন প্রকাশ পাচ্ছে কিশোর গ্যাং। গেমটি খেলতে খেলতে চরমভাবে বিপথগামী হয়ে উঠেছে কিশোররা।
গত বছর থেকে বিশেষ করে করনা মহামারীর ফলে স্কুল, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে অন্যদিকে অনলাইনভিত্তিক ক্লাস পরিচয় হবার হলে অভিবাবকরা তার সন্তানদের হাতে সহসাই ল্যাপটপ , মোবাইল ডিভাইস তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ সুযোগের বেশিরভাগ অপব্যবহার ঘটছে। এমনকি তরুণ প্রজন্ম এই গেম দুটি প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে গেম দুটি নিয়ন্ত্রনে সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ২১মে চাঁদপুরে মামুন (১৪) নামে এক তরুণ মোবাইলের ডাটা কেনার টাকা না পেয়ে মায়ের সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করে। আমরা যখন আগামীর তরুণ প্রজন্মকে সহজলভ্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ঠিক তখন আগামী তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিপথগামী হয়েছে যা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রক কমিশন কে দ্রুত এবং দ্রুততার সহিত এই গানগুলির অপব্যবহার বন্ধ এবং ভালো দিক তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা গড়তে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
এ ধরনের অনৈতিক গেম খেলার মাঠে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনলাইনে গেম খেলার পাশাপাশি ভার্চুয়ালে অর্থ লেনদেন হচ্ছে এমএমএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি ও পরিবার। এমনকি পাড়া-মহল্লায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রায়ই সহিংসতা লেগেই থাকে। আবার এই কিছু ব্যতিক্রম চিত্র রয়েছে, যেমন এশিয়ান টেলিকম আজিয়াটা বড় হাত আঞ্চলিক ভিত্তিক গেমিং প্রতিযোগিতা আহ্বান করে। সেই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের চার তরুণ ৯ হাজার ডলার আয় করে। অর্থাৎ অনলাইন গেম গুলির সঠিক নির্দেশনা ও ভালো কাজে ব্যবহার করা যেত তবে তার মাধ্যমে অনেক আয় করা যেত। কিন্তু আমরা দেখছি এর অপব্যবহার এর সংখ্যা প্রায় ৯৯ শতাংশ। তাই সরকারকে দ্রুত এই গেম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে নীতিমালা ও দিকনির্দেশনা সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তবে হঠাৎ করে এই গেম বন্ধ করে দিলে তরুণ প্রজন্মের মাঝে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, আবার কেউ কেউ ভিপিএন এর মাধ্যমেও এই গেম খেলতে পারে- এমন শঙ্কার কথা তুলে ধরে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সরকারকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাগিদ দিয়েছে সংগঠনটি।