জার্মানভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষ হাইজহোল্ড কম্প্রেসার উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান ‘সিকপ জিএমবিএইচ’ এ কম্প্রেসরের যন্ত্র্যাশ সরবরাহ করছে বাংলাদেশেী ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। এরই ধারাবাহিকতায় সিকপের সঙ্গে এক দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছে ওয়ালটন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ওয়ালটন কর্পোরেট অফিসে অনলাইন প্লাটফর্মে বিজনেস এগ্রিমেন্ট সাইনিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সিকপ ও ওয়ালটনের মধ্যে এক ব্যসায়িক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সিকপ গ্রুপের প্রকিউরমেন্ট ডিরেক্টর জেরাল্ড কোবের ও ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিনেটর (আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডিরেক্টর নিশাত তাসনিম শুচি, অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশী দূতাবাসের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত ও ওয়ালটন কম্প্রেসরের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার রবিউল আলম।
যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের এক্সিকিউইটভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, ওয়ালটন কম্প্রেসরের চিফ অপারেটিং অফিসার নাসির উদ্দিন মন্ডল, ডেপুটি এক্টিকিউটিভ ডিরেক্টর আব্দুর রউফ ও রেজাউল ইসলাম মিনার, সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর আরিফিন নাদভী প্রমূখ।
সিকপ ও ওয়ালটনের মধ্যকার সমব্যবসায়িক চুক্তিকে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডান্ট্র্রিজের ডিরেক্টর নিশাত তাসনিম শুচি। তার প্রত্যাশা- ওয়ালটনের সঙ্গে সিকপের এই ব্যবসায়িক সম্পর্ক বহুদূর এগিয়ে যাবে।
জেরাল্ড কোবের জানান, কম্প্রেসরের মেটাল কাস্টিং পার্টস নেয়ার মধ্য দিয়ে ওয়ালটনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক পথচলা শুরু করেছে সিকপ। ভবিষ্যতে, কম্প্রেসরের অন্যান্য যন্ত্রাংশগুলোও ওয়ালটন থেকে নেয়ার ব্যাপারে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশেী রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, হাই-টেক ইলেকট্রনিক্স পণ্য এখন বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটনের তৈরি কম্প্রেসর যন্ত্র্যাংশ অস্ট্রিয়ার মতো উন্নত দেশের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে। একজন বাংলাদেশী হিসেবে এটি অত্যন্ত গর্বের।
এডওয়ার্ড কিম বলেন, ওয়ালটন ভিশন- ‘গো গ্লোবাল ২০৩০’ নির্ধারণ করেছে। সেই লক্ষ্য পূরণে ২০২১ সালে ইউরোপের ২১টি দেশে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে ওয়ালটন।
রবিউল আলম জানান, সর্বাধুনিক ও কাটিংএজ প্রযুক্তির মেশিনারিজের সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ‘সাইলেন্ট ও ডিউর্যাবল’ কম্প্রেসর। কারখানায় রয়েছে মেটাল কাস্টিং ফাউন্ড্রি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। আছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টেস্টিং যন্ত্রপাতি ও ল্যাব। নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে তুরস্ক, ইটালি, অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে কম্প্রেসর ও এর যন্ত্র্যাংশ রপ্তানি করছে ওয়ালটন।
উল্লেখ্য, কম্প্রেসার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে বাৎসরিক ৭ মিলিয়নের বেশি যন্ত্রাংশ প্রয়োজন হয় সিকপে। চাহিদার পুরোটাই বাংলাদেশে তৈরি যন্ত্রাংশ দিয়ে মেটানোর প্রত্যাশা করছে ওয়ালটন।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ এশিয়ার ৮ম ও বিশ্বের ১৫তম কম্প্রেসর উৎপাদনকারি দেশ। গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ১৬ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র কম্প্রেসার কারখানা। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই কম্প্রেসর উৎপাদন করেছে।