ফের পৃথিবী থেকে জীব মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। ৫ হাজার টারডিগ্রেড ও ১২৮টি স্কুইডের বাচ্চা মহাকাশে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এই স্কুইড অন্ধকারে জ্বলতে পারে। জীব মহাকাশে কতটা নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম এই পরীক্ষার ফলে তা অনেকটাই জানা যাবে বলে মত নাসার।
এই প্রাণীগুলোকে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন বা আইএসএস থেকে স্পেস এক্সের ২২তম কার্গো মিশনের সময় মহাকাশে পাঠানো হবে। এই টারডিগ্রেড এবং স্কুইডের বাচ্চাগুলো আজ ৩ জুন ফ্যালকন ৯ রকেটে উঠবে।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৯ মিনিটে এরা যাত্রা শুরু করবে।
এই টারডিগ্রেডের বিশেষত্ব কী?
বিজ্ঞানীরা এই পরীক্ষার মাধ্যমে মহাকাশে জীব সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। টারডিগ্রেড ছোট প্রাণী। কেবলমাত্র এক মিলিমিটার এর দৈর্ঘ। এছাড়া এরা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকতে সক্ষম। এমনকি উচ্চ চাপ ও তেজস্ক্রিয় ক্ষেত্রেও এরা বেঁচে থাকতে পারে। অথচ এই ধরনের পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ প্রাণীই বাঁচতে পারে না। বেঁচে থাকা এই আশ্চর্য শক্তির কারণে এই প্রাণীগুলোকে বিজ্ঞানীরা মহাকাশের গবেষণা চালানোর জন্য বেছে নিয়েছেন। এদের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট জিনগুলো বোঝার চেষ্টা করবেন যা জীবকে চরম প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকতে দেয়।
স্কুইডদের কেন বেছে নেওয়া হয়েছে?
বিজ্ঞানীরা বোবটাইল প্রজাতির স্কুইডের বাচ্চাদের আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন পাঠাচ্ছেন। এগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তা হল এরা অন্ধকারে নিজেদের আলোকিত করার ক্ষমতা রাখে। মাত্র ৩ মিলিমিটার হয় এদের দৈর্ঘ্য। এই স্কুইডগুলোর অন্ধকারে জ্বলজ্বল করার পিছনে একটি অঙ্গ দায়ী। এগুলো প্রাণীর ভিতরে থেকে আলো বিচ্ছুরিত করে। আলো না থাকলে বায়োলুমিনসেন্ট ব্যাকটেরিয়া থেকে এরা আলোকিত হওয়ার জন্য সহায়তা গ্রহণ করে। তবে এটি অন্তর্নির্মিত নয়। বহু বছর ধরে ব্যাকটিরিয়াগুলো মহাসাগর থেকে স্কুইডের দেহে জমা হয়। গবেষকরা মহাশূন্যে যাত্রা শুরুর আগে বাচ্চা স্কুইডদের দেহে এই ব্যাকটিরিয়া প্রবেশ করান।
এই দুই ধরনের প্রাণীকে মহাকাশে পাঠিয়ে বিজ্ঞানীরা বুঝতে চাইছেন যে মহাকাশের জীবাণুগুলো কীভাবে পৃথিবী থেকে প্রাণী টিস্যুর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।