২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুসারে নতুন গাড়ির চেয়ে রিকন্ডিশন বা ব্যবহৃত গাড়ির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
উদাহরণস্বরূপ ১৫০০ সিসি’র ২০১৭ সালে তৈরিকৃত ও ব্যবহৃত একটি টয়োটা এক্সিও গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্ক ১৬ লাখ ২১ হাজার টাকা এবং ২০১৮ সালে তৈরিকৃত একই নতুন বা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির শুল্ক ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তাছাড়া ২০০০ সিসি’র ২০১৭ সালে তৈরিকৃত রিকন্ডিশন মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার জিপের শুল্ক ৪১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এদিকে, ২০১৮ সালে তৈরিকৃত একই নতুন গাড়ির শুল্ক কর ২৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৩ টাকা।
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) মোটরযান বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ অসংগতির হিসেবে তুলে ধরে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এছাড়া নতুন ও পুরাতন গাড়ির শুল্ক বৈষম্য দূর করতে ‘ইয়োলোবুকের নতুন মূল্য থেকে ডিলার বা ট্রেড ডিসকাউন্ট বাবদ ১০ শতাংশ বিয়োজন পূর্বক বছরভিত্তিক অবচয়ের হার পূর্ববর্তী অবস্থায় রাখার প্রস্তাব বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনটি।
সোমবার (১১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বারভিডা আয়োজিত শুল্ক বৃদ্ধি করে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি নিরুৎসাহিত করন এবং প্রজ্ঞাপন সুবিধার আওতায় নতুন গাড়ির শুল্ক ফাঁকি উৎসাহিতকরণ এর প্রতিবাদে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা’র সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ধনীদের জন্যই এ বাজেট করা হয়েছে। নতুন গাড়ির সম্পূরক শুল্কে হাত দেওয়া হয়নি। মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এ বাজেটে কোনো সুসংবাদ নেই। নতুন গাড়ির শুল্ক পুরাতন গাড়ির চেয়ে কম হতে পারে না, অর্থমন্ত্রী এটা নিজে বলেছেন, কিন্তু সেখানেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তা বাস্তবায়ন করেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিকন্ডিশন গাড়ির শতভাগ জাপান থেকে আসে। ওই দেশে দুই থেকে তিন হাজার কিলোমিটার ব্যবহারের পর অনেকেই তা বিক্রি করে দেয়। আমরা তিন বছরের অবচয় সুবিধা পাই, দুই বছরের পাই না। বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতীয় গাড়ির ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে।
তিনি বলেন, নতুন গাড়ি আমদানিতে কর ফাঁকিতে সরকারের রাজস্ব অনেক কমে গেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, কোনো অবস্থাতেই নতুন গাড়ির শুল্ক রিকন্ডিশন গাড়ির চেয়ে কোনো ক্রমেই কম হতে পারে না। অথচ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনাও নিদারুণভাবে উপেক্ষিত। প্রকৃত সংযোজন কারখানা ব্যতীত কোনো মহলকে যেন অন্যায্য শুল্ক সুবিধা দিয়ে বাজার বৈষম্য সৃষ্টি করা না হয়।
তিনি আরও বলেন, জনবান্ধব সরকারের কাছে আমরা ভোক্তা প্রিয় নিরাপদ টেকসই ও সঠিক রাজস্ব প্রদায়ী গাড়ি হিসেবে রিকন্ডিশন মোটরযান আমদানি, বিপণন ও ব্যবহারে আরও বেশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উপযোগী করার লক্ষ্যে একটি স্থিতিশীল ও গ্রহণযোগ্য শুল্ক নীতিমালার আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও আবদুল মান্নান চৌধুরীসহ প্রমুখ।