বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান চিপের চাহিদা মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে নতুন কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড (টিএসএমসি)। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে গাড়ি শিল্পে চিপের সরবরাহ সংকট গত কয়েক মাস ধরেই বেশ ভুগিয়েছে। এজন্য বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রযুক্তি জায়ান্ট এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় অর্থনীতিগুলো চিপে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রেকর্ড বিক্রি ও মুনাফা করেছে টিএসএমসি। ব্যবসা কার্যক্রম আরো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চীনের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা কারখানায় ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ এ চিপ নির্মাতা জায়ান্টটি।
চিপ নির্মাণ শিল্পকে শুধু তাইওয়ানে পুঞ্জীভূত না রেখে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা টিএসএমসির। এক্ষেত্রে ঘরের পাশে চীনের মতো সম্প্রসারণশীল একটি পরাশক্তির উপস্থিতি তাদের উৎপাদন পরিকল্পনা ঢেলে সাজাতে বাধ্য করছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের কোন কোন অংশে কারখানা স্থাপন হবে—এ বিষয়টি নিশ্চিত করেননি টিএসএমসির চেয়ারম্যান মার্ক লিয়ু। গত মে মাসে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছিল, আরিজোনাতেই কার্যক্রম সম্প্রসারণে যেতে পারে টিএসএমসি।
গ্রাহকদের জরুরি প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে চীনের নানজিংয়ে নিজেদের সক্ষমতা সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানান লিয়ু। সেখানে ২৮ ন্যানোমিটার সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং টেকনোলজি নিয়ে আসতে যাচ্ছে তারা। আগামী বছরের দিকে সেখানে উৎপাদন শুরু হবে এবং ২০২৩ সালের মাঝামাঝি নাগাদ মাসপ্রতি ৪০ হাজার ওয়েফার উৎপাদন সক্ষমতা অর্জনের পরিকল্পনা চলছে।
গত এপ্রিল-জুনে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিটির আয় ২৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২৯ কোটি ডলার। আগামী সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হতে পারে ১ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার থেকে ১ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার। গত বছরের একই প্রান্তিকে যেখানে আয় হয়েছিল ১ হাজার ২১০ কোটি ডলার।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে টিএসএমসির মুনাফা ১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি তাইওয়ানিজ ডলার বা ৪৮১ ডলার। চলতি বছর টিএসএমসির শেয়ারদর বেড়েছে ১৬ শতাংশ। এতে কোম্পানিটির বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার।