নারীর ডিজিটাল-নিরাপত্তা সুরক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঠিক প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, নারীদের সাইবার-নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সাইবার-ক্রাইম বিরোধী সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলাও অপরিহার্য।
আমরা যত বেশি ডিজিটাল হবো, সমাজের দুর্বল অংশ বিশেষ করে নারী ও শিশু বিপন্ন থেকে আরো বিপন্নতর হবে’ এ কথা উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সব-প্রতিষ্ঠানই তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের দোহাই দিয়ে কার্যত প্রতিকারে খুব কমই গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই পরিস্থিতি উত্তরণে বিশ্বের বহুদেশ ‘সোস্যাল মিডিয়া আইন’ করেছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সঠিক ও সক্রিয়ভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে নারী ও কন্যা শিশুর ওপর ডিজিটাল সহিংসতা প্রতিরোধে প্রয়োজন আরও কার্যকর উদ্যোগ’ শীর্ষক এক ভার্চূয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছে নারী সমাজ। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, সব-বয়সী মেয়েদের ছবি সম্পাদনার মাধ্যমে বিকৃত করে বা অসৎ উপায়ে সংগ্রহ করে তাদের ছবি ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ ব্যাপারে তিনি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা ওপর গুরুত্ব দেন। এটি করা সম্ভব বলে সাইবার-ক্রাইম হ্রাস করা সম্ভব হবে বলে মন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।
মোস্তফা জব্বার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, এই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো বিশেষ করে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব ও ডিজিটাল ডিভাইস শনাক্ত যন্ত্র দেশের থানাগুলোতে না থাকায় ক্ষেত্র বিশেষে আইনটির অপপ্রয়োগ হতেই পারে। তবে, এ অবস্থার উত্তরণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল বা সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে মহিলা পরিষদ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ অবস্থ্না থেকে তা পালন করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির বিষয়ে সচেতন না হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হার বাড়বে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
এর আগে মন্ত্রী হাইটেক প্রফেশনাল নামক কম্পিউটার কোম্পানীর রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বছরব্যাপি অনুষ্ঠানমালা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।