বাংলাদেশী মাল্টিন্যাশনাল ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতে প্রতিনিয়ত ইনোভেটিভ আইডিয়া জেনারেট করছেন ওয়ালটনের তরুণ মেধাবী প্রকৌশলীরা। এরই ধারাবাহিকতায় কর্মচ লতায় নতুন মাত্রা যোগ করতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে দুটি ডিপার্টমেন্টের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট দুটির পরিবর্তিত নাম হলো- প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট এবং কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট। পুর্বে এই দুই ভিাগের নাম ছিলো যথাক্রমে প্রোডাকশন ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল। নবগঠিত এই দুই বিভাগের আওতায় কারখানায় সব ধরনের উৎপাদন এবং উৎপাদিত পণ্যের কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রণ ও নিশ্চিত করা হবে।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ‘ইন্ট্রোডিউসিং সিরিমোনি অব প্রোডাকশন এন্ড কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম নুরুল আলম রেজভী এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গোলাম মুর্শেদ। এসময় নবগঠিত বিভাগ দুটি উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গোলাম মুর্শেদ। পাশাপাশি দুটি বিভাগের অফিসিয়াল লোগো উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার, এমদাদুল হক সরকার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস উদয় হাকিম, কর্নেল (অবঃ) শাহাদাত আলম, তানভীর রহমান, তাপস কুমার মজুমদার, নিজাম উদ্দীন মজুমদার, আনিসুর রহমান মল্লিক, ইউসুফ আলী, তাহসিনুল হক, ড. সাখাওয়াত হোসাইন, রবিউল আলম, তোফায়েল আহমেদ, ইয়াসির আল ইমরান, সিরাজুল ইসলাম, মোহসিন সরদার ও আল ইমরান প্রমুখ। অনুষ্ঠান স ালনা করেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর চিত্রনায়ক আমিন খান।
জানা গেছে, অনুষ্ঠানে প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট এবং কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা তাদের কর্মকা-ের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এখন থেকে এই দুই বিভাগের আওতায় কারখানায় যথাক্রমে সব ধরনের উৎপাদন এবং উৎপাদিত পণ্যের কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রণ ও নিশ্চিত করা হবে।
এস এম নুরুল আলম রেজভী বলেন, ওয়ালটনের প্রতিটি বিভাগ এবং সেকশন স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে কাজ করছে। কাজের পূর্ণ স্বাধীনতা পাচ্ছেন তারা। সম্প্রতি কারখানায় রিসার্স এন্ড ইনোভেশন সেন্টার গঠিত হয়েছে। পাশাপাশি নতুনভাবে এই দুটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো কর্মীদের কাজের মান, পণ্যের মানসহ সব বিষয় সুচারুরূপে পরিচালনা করা। নিশ্চয়ই এই উদ্যেগ ওয়ালটনকে আরো অনেকদূর এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
গোলাম মুর্শেদ বলেন, উৎপাদন ও ব্র্যান্ডের সঙ্গে আমাদের সবার অ্যাডাপ্টেশন থাকতে হবে। ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করে দিতে হবে আমাদেরই। এ জন্য পণ্য উৎপাদনে শতভাগ কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর ওয়ালটন। উৎপাদনের মৌলিক বিষয় থেকে শুরু করে ক্রেতাকে বিক্রয়োত্তর সার্ভিস দেয়া পর্যন্ত সর্বোত্র কোয়ালিটি নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান টার্গেট। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে পণ্য উৎপাদনে উচ্চ মান সুনিশ্চিত করতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে সুবিন্যাস্ত করার পরিকল্পনা নিয়েই এই দুই বিভাগ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। আশা করছি এতে কারখানার কার্যক্রম আরো প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। এর মাধ্যমে ওয়ালটনের গ্লোবাল বিজনেস অপারেশন নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে। আর ওয়ালটনের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়া। ওই লক্ষ্য পুরণেও সিঁড়ি হিসেবে কাজ করবে এই উদ্যোগ।
উল্লেখ্য, দেশেই নিজস্ব কারখানায় আন্তর্জাতিক মানের ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন করছে ওয়ালটন। উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে ওয়ালটন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রায় এক হাজার একরেরও বেশি জায়গাজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক কারখানা। এখানে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্ল্যায়েন্স ও লিফটসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি হচ্ছে।
পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের গবেষণা ও উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটসহ বিভিন্ন বিভাগ গড়ে তুলেছে ওয়ালটন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে ওয়ালটন। সম্প্রতি ইনোভেটিভ পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে কারখানায়। এই সেন্টার নিত্য নতুন ডিজাইন ও বিশেষ ফিচারের পাশাপাশি পণ্য উৎপাদনে প্রযুক্তির সমন্বয় সাধন করবেন তাদের বিস্তৃত গবেষণামূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে।