ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাইজেশনের প্রসারের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাসহ সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য এখন বড় একটি চ্যালেঞ্জ।সে সংকটও অতিক্রম করতে আমরা কাজ করছি-আমরা সফল হবো বলে মন্ত্রী দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আমেরিকা প্রবাসি বাংলাদেশি ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের আয়োজিত ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি সম্মেলন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অন-লাইনে সংযুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নসহ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পিছিয়ে নেই। তিনি বলেন, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করায় সৃষ্ট পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বৈশ্বিক নেতৃত্বের জায়গায় উপনীত হয়েছে। এই অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ফসল বলে উল্লেখ করেন কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার।কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশে তাঁর ৩৫ বছরের পথপরিক্রমার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ১৯৬৪ সালে এই ভূখণ্ডে প্রথম কম্পিউটার আসে কিন্তু ১৯৮৭ সালের আগে পর্যন্ত কম্পিউটার কেবল বিশেজ্ঞরা ব্যবহার করতেন্। কম্পিউটারে বাংলাভাষা প্রবর্তণের পর কম্পিউটার জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে বলে কম্পিউটারে বাংলা ভাষার জনক মোস্তাফা জব্বার উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং আইটিইউ ও ইউপিইউ-এর সদস্য পদ অর্জনের মাধ্যমে দেশে ডিজিটাইজেশনের যাত্রা শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট -ট্যাক্স প্রত্যাহার করে তা সাধারণ মানুষের নাগালে পৌছে দেন। মোবাইল ফোন সহজলভ্য করতে এবং ভি-স্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাইজেশনে বঙ্গবন্ধুর বপন করা বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেন তিনি।
দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে এবং এখাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সরকারের গৃহীত প্রযুক্তি বান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের গৃহীত বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের পাশাপাশি আমাদের মেধাবি নতুন প্রজন্ম আমাদের এগিয়ে যাওয়ার বড় হাতিয়ার।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে আমরা যে যুদ্ধটি শুরু করেছি তা সফলতার দ্বারে কড়া নাড়ছে। আমরা সৌদি আরবে আইওটি ডিভাইস রপ্তানি করছি। বিশ্বের ৮০টি দেশে বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি হচ্ছে। ২০১৮ সালের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্তৃপক্ষের সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাসহ সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরকারের যে কোন পরামর্শ গুরুত্বের সাথে আমলে নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও কার্যকর হবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আমেরিকা প্রবাসি উদ্যোক্তা মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং বিটিআরসি-এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাসিম পারভেজ বক্তৃতা করেন।
বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা ডিজিটিাল নিরাপত্তার জন্য প্রযুক্তিগত সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।