ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন ব্যতিত সামনের দিনের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে না। নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবি ও সৃজনশীল। তারা খুব সহজেই ডিজিটাল প্রযুক্তি দক্ষতা আয়ত্ত করতে সক্ষম। মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি তরুণ শিক্ষার্থীদের যে কোন ভাষাতেই হউক তাদের ‘কমিউনিকেশন্স এক্সপ্রেশান ’দক্ষতা অর্জনে সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী গতকাল সোমবার রাতে ঢাকায় হুয়াওয়ে আয়োজিত এক অনলাইন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২১-এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নতুনদের প্রতি এ আহ্বান জানান।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, যেকোনো উন্নয়নেরই মূল শক্তি হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। তাই, তাদের ইতিবাচক দিকে উৎসাহিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হুয়াওয়ের সিডস ফর দ্য ফিউচার এমন একটি প্রোগ্রাম, যা তরুণদের আইসিটি দক্ষতা বিকাশের মধ্য দিয়ে তাদের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এই প্রোগ্রামটি কেবল শিক্ষার্থীদের নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সহায়তা করবে না, তাদের নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশ করবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যার ফলে তারা কর্মক্ষেত্রেও উন্নতি করতে পারে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষাকে কেবল পাঠ্যসূচি বা সিলেবাসে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না ।
শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, নিজেদের ভবিষ্যতে তৈরি করার উপযোগী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের সফলতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা ডিজিটাল বাাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন। ৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রোপন করা ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজটি চারা গাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ সাল থেকে গত ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বয়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে যা বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা বক্তৃতা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের অসংখ্য উদ্ভাবনী আইডিয়া রয়েছে। সঠিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে তারা এসব আইডিয়াকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা এ ব্যাপারে সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু, ইকোসিস্টেমও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন কিছু শিখেছে, যা তারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাবে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন বলেন, “বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক জনসম্পদ রয়েছে, যার একটি বড় অংশ হল প্রতিভাবান তরুণ। হুয়াওয়ে বিশ্বাস করে ডিজিটাল অগ্রগতির পাশাপাশি উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে তরুণ সমাজ।
মন্ত্রী দেশের আটটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই কর্মসূচির আওতায় নির্বাচিত সেরা ১৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করেন।
এ বছর বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরা হুয়াওয়ে সদর দপ্তর থেকে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ পান এবং প্রযুক্তিগত নানাবিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন। টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক, আইসিটি’র গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, ফাইভজি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ক্লাউড কম্পিউটিং ইত্যাদি বিষয়ে তাঁরা ধারণা লাভ করেন। এর পাশাপাশি, এ প্রোগ্রামে নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশে একটি বিশেষ সেশনেও অংশ নেন।