যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বহু রোহিঙ্গা শরণার্থী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের বিরুদ্ধে ১৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের এক মামলা দায়ের করেছে। ফেসবুক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল, যার ফলাফল হিসেবে মিয়ানমারে সেনা অভিযানে ১০ হাজারের মত রোহিঙ্গা মুসলমানের প্রাণহানি হয়, আর দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয় আরও কয়েক লক্ষ মানুষ।
ফেসবুক এসব অভিযোগ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি। প্রতিষ্ঠানটির করপোরেট নাম এখন মেটা। ফেসবুকের বিরুদ্ধে “বছরের পর বছর ধরে বিদ্বেষ ও বিপজ্জনক মিথ্যা তথ্য ছড়ানোতে” সায় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রতিনিধিত্ব করা একটি ব্রিটিশ আইন প্রতিষ্ঠান ফেসবুককে একটি চিঠি লিখেছে, যেটি দেখেছে বিবিসি। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে:
১.ফেসবুকের অ্যালগরিদম “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বাড়িয়েছিল”
২.প্রতিষ্ঠানটি মিয়ানমারের রাজনৈতিক বাস্তবতা জানে এমন মডারেটর ও ফ্যাক্ট চেকার নিয়োগে “বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছিল”
৩.প্রতিষ্ঠানটি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিয়েছে এমন পোস্ট সরিয়ে নিতে এবং সম্পর্কিত অ্যাকাউন্ট মুছে দিতে ব্যর্থ হয়েছিল
৩.দাতব্য সংস্থা ও গণমাধ্যমের সতর্কবার্তা সত্বেও এটি “উপযুক্ত ও সময়োচিত ব্যবস্থা” নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
৪.যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীরা সান ফ্রানসিসকোতে একটি অভিযোগে দায়ের করেছেন যেখানে বলা হয়েছে, ফেসবুক “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি ছোট দেশে বাজারে ভালভাবে ঢুকবার জন্য রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবন বলি দিতে পর্যন্ত ইচ্ছুক ছিল”।
তারা যেসব ফেসবুক পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়েছে সেগুলো নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তদন্ত করেছিল, যার একটি ২০১৩ সালের এবং সেটির ভাষা ছিল: “আমরা এমনভাবে তাদের প্রতিহত করবো যেভাবে ইহুদিদের প্রতিহত করেছিলেন হিটলার”।
আরেকটি পোস্টের ভাষা ছিল: “জ্বালানি ঢেলে আগুন ধরিয়ে দাও, যাতে তারা আরও তাড়াতাড়ি আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারে”।
মিয়ানমারে দুই কোটির বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে। দেশটিতে অনেকের জন্যই এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটি খবর পাওয়ার এবং দেয়ার প্রধান অথবা একমাত্র মাধ্যম।